• অক্টোবর ২৯, ২০২৫
  • লিড নিউস
  • 3
সিলেট চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন স্থগিতের আদেশ হাইকোর্টে স্থগিত

নিউজ ডেস্কঃ সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নির্বাচন আগামী ১ নভেম্বরই অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) হাইকোর্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া নির্বাচন স্থগিতাদেশের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা নেই বলে নির্দেশ দিয়েছেন।

চেম্বারের পরিচালক পদপ্রার্থী ইমরান হোসেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেন, “আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পূর্বনির্ধারিত তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে ব্যবসায়ী সমাজ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে।”

হাইকোর্ট সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে কামরুল হামিদসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের আওতায় রিট আবেদন (নং ১৭৬২৩/২০২৫) দায়ের করেন। তাঁদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মো. ইসমাইল হোসেন। রিটটি মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের কোর্ট নম্বর ১২-তে উত্থাপিত হয়।

এর আগে গত ২৬ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন-১ শাখা থেকে এক চিঠিতে নির্বাচন স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই চিঠিতে ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই করে নতুন করে তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশে বলা হয়, সিলেটের জেলা প্রশাসকের প্রেরিত পত্রের (নং ০৫.৪৬.৯১০০.০২০.৯৯.০০৪.২৫) প্রেক্ষিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

নির্বাচন স্থগিতের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ সোমবার (২৭ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করে। তারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে পূর্বঘোষিত তারিখে ভোট গ্রহণের দাবি জানান। অবশেষে আদালতের নির্দেশে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিফলন ঘটল।

ব্যবসায়ী নেতা খন্দকার সিপার আহমদ বলেন, “হাইকোর্টের এই রায় সিলেটের ব্যবসায়ী সমাজের জয়। এখন প্রশাসনের দায়িত্ব হলো নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা।” তিনি জেলা প্রশাসককে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এই নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে— সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ও সিলেট ব্যবসায়ী ফোরাম। দুই প্যানেলের মোট ৪২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ফালাহ উদ্দিন আলি আহমদ (সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ) ও এহতেশামুল হক চৌধুরী (ব্যবসায়ী ফোরাম)।

নির্বাচন তফসিল অনুযায়ী, বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ ও শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২২ অক্টোবর, আর ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয় ১ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত।

গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর সভাপতি তাহমিন আহমদ আত্মগোপনে গেলে চেম্বারের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। এবারের নির্বাচনকে তাই ব্যবসায়ী সমাজের পুনর্জাগরণের সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ফালাহ উদ্দিন আলি আহমদ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের উন্নয়ন ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের সহায়তার। অন্যদিকে এহতেশামুল হক চৌধুরী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চেম্বারকে পুনরায় সক্রিয় করে সিলেটকে অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার।

ব্যবসায়ী মহল মনে করছে, হাইকোর্টের এই নির্দেশনা সিলেট চেম্বারের নির্বাচনকে নতুন গতি দিয়েছে এবং দীর্ঘ অনিশ্চয়তার অবসান ঘটিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।