• নভেম্বর ১, ২০২৫
  • লিড নিউস
  • 4
অবস্থান ধর্মঘটের ডাক দিলেন সাবেক মেয়র আরিফ

নিউজ ডেস্কঃ সিলেট বঞ্চনার শিকার। এমন অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো নগর। উন্নয়ন বৈষম্যের প্রতিবাদে এবার ধর্মঘট ও গণঅবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় নগরীতে মশাল মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরিফুল হক চৌধুরী এই ঘোষণা দেন। এর আগে হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ এলাকা থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

মশাল মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরিফুল হক চৌধুরী আগামীকাল রবিবার সকাল ১১টা থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নগরীতে ধর্মঘট ও কোর্ট পয়েন্ট থেকে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট পর্যন্ত ঘোষিত গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সিলেটের সর্বস্তরের জনসাধারণকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে নগরীর কুমারপাড়াস্থ নিজ বাসভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আরিফুল হক চৌধুরী জানান, সিলেটের উন্নয়ন বৈষম্য ও সরকারি প্রকল্পে অবহেলার প্রতিবাদেই এই অরাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে। সভায় জানানো হয়, আগামী রবিবার সকাল ১১টায় সিলেট সিটি পয়েন্ট থেকে সুরমা মার্কেট পয়েন্ট পর্যন্ত গণঅবস্থান অনুষ্ঠিত হবে।

সিলেট অঞ্চলের ন্যায্য দাবি আদায়ে ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে একটি সার্বজনীন প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়েছে। এতে বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ধর্মীয় ও পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা যুক্ত হয়েছেন। সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিলেট সবসময়ই বঞ্চিত। গত ১২ অক্টোবর কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশ থেকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ কারণেই এবার ‘গণঅবস্থান’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিলেট সবসময়ই বঞ্চিত। গত ১২ অক্টোবর কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশ থেকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ কারণেই এবার ‘গণঅবস্থান’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

আরিফুল হক চৌধুরী সভায় বলেন, “সিলেটবাসীর ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।” তিনি ইমাম, পুরোহিত, গির্জা ও প্যাগোডার দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে তারা ধর্মীয় উপাসনালয়ে সিলেটের উন্নয়ন বঞ্চনার বিষয়টি তুলে ধরেন।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা এবং রেল উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সিলেটের সড়ক ও রেলপথের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন। উপদেষ্টারা আশ্বাস দিয়েছেন, সিলেটের জন্য ১০টি নতুন রেলবগি বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে তিনি বলেন, ‘রেল টিকিট ও অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখনও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। বিমান ভাড়াও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।’

আরিফুল হক চৌধুরী জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দেও সিলেট পিছিয়ে আছে। ২০২১ সালে সিলেটের সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও সেটি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। স্থানীয় সরকার সচিব নতুন করে প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন, যা হতাশাজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘বাদাঘাটে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজেও কোনো অগ্রগতি নেই। এভাবে চলতে থাকলে রমজান মাসে সিলেটে পানির সংকট দেখা দিতে পারে।’

সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা ‘সিলেট আন্দোলন’-এর কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, উন্নয়ন বৈষম্যের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।