- নভেম্বর ২০, ২০২৫
- লিড নিউস
- 3
নিউজ ডেস্কঃ সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রের পুরনো একটি কূপে নতুন করে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কূপটি থেকে প্রতিদিন পাঁচ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ সম্ভব হবে। কৈলাশটিলার ১ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শেষে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন প্রকল্পটির পরিচালক শফিকুল ইসলাম। ওই কূপটি গত ৬ বছর ধরে বন্ধ ছিল।
জানা গেছে, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রে ৯টি কূপ রয়েছে। ১৯৬১ সালে গ্যাসক্ষেত্রটির ১নং কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। একবার বিরতি দিয়ে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কূপটি থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হয়। এরপর ওই কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০২৩ সাল থেকে দেশের পুরনো কূপগুলোতে নতুন করে গ্যাসের সন্ধান শুরু করে সরকার। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রের ১৪টি কূপে শুরু হয় ওয়ার্কওভার। ইতোমধ্যে কৈলাশটিলা ১ নম্বরসহ ৭টি কূপের ওয়ার্কওভার সম্পন্ন হয়েছে। ৭টি কূপের সবকটিতেই গ্যাসের মজুদ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, প্রায় ৪ মাস আগে কৈলাশটিলা ১ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভার শুরু করে বাপেক্স। ওয়ার্কওভারকালে প্রায় ২২ হাজার ফুট গভীরে গ্যাসের সন্ধান মিলে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা কূপটিতে ১.৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সিলেট গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুর ক্ষেত্রের ৩ নম্বর কূপে নতুন করে গ্যাসের সন্ধান মিলে। ওই কূপ থেকে নতুন করে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
গত বছরের ২৭ জানুয়ারি রশিদপুরের ২ নম্বর কূপের নতুন স্তরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই স্তরে প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ওই বছরের ২২ অক্টোবর খননকাজ শেষে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ৭নং কূপের ১২০০ মিটার গভীরে গ্যাসের সন্ধান মিলে। ওই কূপ থেকে দৈনিক ৭-৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে।
ওই বছরের ২৪ মে কৈলাশটিলার ৮নং কূপের ৩ হাজার ৪৪০ থেকে ৫ হাজার ফুট গভীরতায় গ্যাসের সন্ধান মিলে। বর্তমানে সিলেটের কূপগুলো থেকে দৈনিক প্রায় ১১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, কৈলাশটিলা ১ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার শেষে গ্যাসের মজুদের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। কূপটিতে এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। এসব কাজ শেষে এক-দু’দিনের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত তথ্য জানাবেন।
সূত্র আরও জানায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন কূপগুলোতে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুসন্ধান কূপ ও ওয়ার্কওভারের কাজ চলছে। দ্রুত এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পগুলো থেকে আশানুরূপ গ্যাস পাওয়া গেলে দৈনিক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর সিলেট অঞ্চলে আবিষ্কার হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এর মধ্যে কেবলমাত্র ছাতক গ্যাসক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বাকিগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে।
