- ডিসেম্বর ১১, ২০২৫
- লিড নিউস
- 5
বিশেষ প্রতিবেদনঃ সিলেট-৫ কি ছেড়ে দিচ্ছে বিএনপি? এখনো এ আসনে দলের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। একেক করে নীরব হচ্ছে মাঠে থাকা বিএনপি’র প্রার্থীরা। তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন জেলা বিএনপি’র প্রথম সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ চাকসু মামুন। হতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থীও।
জমিয়ত সভাপতি ওবায়দুল্লাহ ফারুক এ আসনে সক্রিয়। তিনি এ আসনে ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ছিলেন। জমিয়তের সঙ্গে জোটবদ্ধ হলে বিএনপি এ আসনটি জমিয়তের প্রার্থী ওবায়দুল্লাহকে ছাড় দেবে বলে জমিয়তের নেতারা জানিয়েছেন।
আরিফুল হক চৌধুরী বিএনপি’র প্রার্থী হওয়ায় সিলেট-৪ আসন জমিয়ত থেকে ছাড় দেয়া হতে পারে। হিসাব অনুযায়ী সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে বিএনপি কেবল একটিতে শরীকদের ছাড় দেবে। বাকি ৫টি আসনে ধানের শীষের প্রার্থীরাই নির্বাচন করবেন। এ আসনগুলোতে ইতিমধ্যে বিএনপি’র তরফ থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। জামায়াতের সঙ্গে আন্দোলনে শরিক থাকা ৮ দলের সঙ্গে ভোটের সমঝোতা হচ্ছে। তবে এখনো জোটবদ্ধ ভোটের কোনো ঘোষণা নেই। কিংবা প্রার্থী নিয়ে দর কষাকষির বিষয়টিও স্পষ্ট নয়।
ভোটের মাঠে প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে ব্যস্ত ৮ দলের প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে সিলেট জেলার চারটি আসনে লড়াই করার আভাস দিচ্ছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা। দলের নেতারাও ভোট বাড়াতে চারটি আসনে তৃণমূল পর্যন্ত ছুটে যাচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছেন সিলেট-১ আসনে মাওলানা হাবিবুর রহমান, সিলেট-৩ আসনে লোকমান আহমদ, সিলেট-৪ আসনে জয়নাল আবেদীন ও সিলেট-৬ আসনে সেলিম উদ্দিন। এই চারটি আসনের মধ্যেও সিলেট-৩ ও সিলেট-৬ আসনকে বেশি সুসংহত বলে মনে করছেন জামায়াত নেতারা। তবে সমঝোতার ভোট হলে জামায়াতের কাছে চারটি আসন চাইবে সমঝোতার অন্য তিনটি ইসলামী রাজনৈতিক দল। খেলাফত মজলিস সিলেট-২ আসনে দলের যুগ্ম মহাসচিব মুনতাসির আলী, সিলেট-৫ আসনে মুফতি আবুল হাসান ও সিলেট-৩ আসনে দেলোয়ার হোসেন মনোনয়ন চাইবেন।
দলটির নেতারা মনে করেন ওই তিনটি আসনে তাদের শক্তিশালী ভোটব্যাংক রয়েছে। সিলেট-২ আসনে দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মুনতাসির আলীর অবস্থান জামায়াত প্রার্থী থেকে ভালো রয়েছে। সিলেট-৫ আসনে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন মুফতি আবুল হাসান। জকিগঞ্জ থেকে প্রার্থী হওয়ায় তার ভোটব্যাংক শক্তিশালী। জমিয়তের প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর দিতে হলে মুফতি আবুল হাসানই যোগ্য প্রার্থী বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। আর সিলেট-২ আসনে জামায়াতের অবস্থান তেমন শক্তিশালী নয়। প্রার্থীও নির্বাচনী মাঠে আবহ তৈরি করতে পারেননি। আর এ আসনে মুনতাসির আলী পরিচিত মুখ।
সিলেট-৩ আসনে দেলোয়ার হোসেনের ভোটব্যাংক বেড়েছে। ফলে এ আসনটিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে দলটির নেতারা। ৮ দলের ভেতরে থাকা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনও সিলেটে একটি করে দু’টি আসনে প্রার্থী চাইছে। শনিবার সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের আগে বালাগঞ্জ সফর করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রধান মাওলানা মামুনুল হক। এ সময় বালাগঞ্জে আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে তিনি সিলেট-৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হিসেবে আল্লামা নুরউদ্দিন গহরপুরী (রহ.) সন্তান হাফিজ মাওলানা মোসলেহ উদ্দিন রাজুকে এ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন। এর আগে এ আসনে ঘোষিত প্রার্থী ছিলেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম হাজীপুরি। মাওলানা রাজুকে প্রার্থী করা মামুনুল হকের চমক বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।
তারা জানিয়েছেন- এ আসনটিকে সমঝোতার ভোটে গুরুত্ব দিয়ে চাইবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। যদি আসনটি মাওলানা মামুনুল হক অংশকে ছাড় দেয়া হয় তাহলে জামায়াত ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর কী হবে? এ নিয়ে আসনের প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে জল্পনার অন্ত নেই। মামুনের এক ট্রাম্পকার্ড আসনের ভোটের হিসাব পাল্টে দিয়েছে বলে মনে করছেন দলের নেতারা। সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে একটি আসন সিলেট-৫ আসনকে গুরুত্ব দিয়ে চাচ্ছে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন। এ আসনে তাদের প্রার্থী তরুণ বক্তা ও পরিচিত মুখ মাওলানা রেজাউল করিম আবরার। তবে সমঝোতার আলোচনায় থাকলেও আবরার ভোটের মাঠে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি খুব কমই এলাকায় যাতায়াত করছেন। তবু ইসলামী আন্দোলনের নেতারা এ আসনটি ছাড় দিতে চাইছে না বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা। সূত্র: মানবজমিন
