• আগস্ট ২৬, ২০২২
  • মৌলভীবাজার
  • 360
চা–শ্রমিকদের ধর্মঘট চলছে, তবে আজ সভা–সমাবেশ নেই

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা–শ্রমিকদের ধর্মঘট ১৪তম দিনের মতো চলছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা–বাগানের কাজ বন্ধ থাকলেও আজ শুক্রবার শ্রমিকদের সভা–সমাবেশ বা বিক্ষোভের মতো কোনো কর্মসূচিতে পালন করতে দেখা যায়নি। বাগানমালিকদের সঙ্গে আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে বসার ঘোষণার পর একধরনের নীরব ধর্মঘট পালন করছেন শ্রমিকেরা।

আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন চা–বাগান ঘুরে শ্রমিকদের তেমন একটা দেখা মেলেনি। বেশির ভাগ শ্রমিকই বাড়িতে রয়েছেন। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিকদের একত্রিত হয়ে সমাবেশ করার কথা রয়েছে।

৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি ও পরে ১৩ আগস্ট থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করে আসছেন চা–শ্রমিকরা। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটি ধর্মঘট প্রত্যাহার করলেও সেটা মানছেন না সাধারণ শ্রমিকেরা। আন্দোলন সফল করতে সড়ক, মহাসড়ক, রেলপথ অবরোধ করতে দেখা গেছে তাঁদের। দাবি আদায়ে গত কয়েক দিন ধরে বেশ উত্তাল ছিল চা–বাগানগুলো। এরই মধ্যে গতকাল রাতে খবর আসে—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল চা–বাগানের মালিকদের সঙ্গে সভা করবেন। কাল বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস।

ভাড়াউড়া চা–বাগানের নারী চা–শ্রমিক সবিতা হাজরা প্রথম আলোকে বলেন, ১২০ টাকা মজুরি আর সামান্য রেশন দিয়ে খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ বেড়েছে। বাজারে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। এই অবস্থায় মজুরি বৃদ্ধির জন্য এত দিন ধরে আন্দোলন করছেন। এ কয় দিন আরও কষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালিকদের কাছ থেকে আমাদের জন্য ভালো মজুরি এনে দেবেন। আমরা আর কারও ওপরে বিশ্বাস করি না। সবাই আমাদের নিয়ে খেলে। শুধু প্রধানমন্ত্রীকেই আমরা বিশ্বাস করি।’

এদিকে চলমান সংকট নিরসনে শ্রীমঙ্গস্থ বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে শ্রম অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাহিদুল ইসলামের আহ্বানে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন বেশ কয়েকজন বাগান পঞ্চায়েত নেতারা। সেখানে জেলা, উপজেলা ও থানা প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়।

বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সবাই প্রধানমন্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সাধারণ চা–শ্রমিকেরা সেটাই মেনে নেবেন। এ জন্য অবশ্যই সবকিছু বিবেচনা করে একটি মানসম্মত মজুরি নির্ধারণ করবেন। আমাদের শেষ ভরসাস্থল থেকে এই আশাটুকু আমরা সবাই করছি।’