- অক্টোবর ৮, ২০২২
- জাতীয়
- 294
নিউজ ডেস্কঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের (এমপি) কেউ প্রভাব বিস্তার করলে তা নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি একই সঙ্গে বলেছে, মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব আপনাদের। মনে রাখতে হবে আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবন অডিটরিয়ামে শনিবার ডিসি-এসপিদের নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেন জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আহসান হাবিব খান।
ভোটের মাঠে সাংবাদিকদের কাজে যাতে বাধা সৃষ্টি করা না হয় সে ব্যাপারেও বৈঠকে আমলাদের পরামর্শ দেয়া হয়। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে কি না সে বিষয়ে নজরদারির নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
ইসি হাবিব বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেয়া। যেকোনো মূল্যে আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচনকালীন আপনারা আমাদের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবেন।
‘কখনো দলীয় মনোভাব পোষণ করা যাবে না বা রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যাবে না। দায়িত্ব পালনে প্রার্থী, রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে হবে। কখনো অতি উৎসাহী হয়ে এমন আচরণ করবেন না যাতে আপনাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ফৌজদারি বা ক্রিমিনাল মামলা থাকলে তা ভিন্নভাবে আদালতে স্বাভাবিক গতিতে চলবে। অযথা নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বচ্ছ মনোভাব দেখাতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থী বা নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।’
‘কোনো প্রার্থীর বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। বিগত সময়ে নির্বাচনের আগে ও পরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা দেখা গেছে। এ বিষয়ে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে।’
ইসি হাবিব বলেন, ‘নির্বাচনের আগে-পরে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের পক্ষ বা বিভিন্ন মহল নানা ধরনের গুজব বা অপপ্রচার ছড়ায়। মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলে। আপনারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। তেমনটা হলে দ্রুত গুজব সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।’
আহসান হাবিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দেয়া নীতিমালা অনুসরণ করে খবর সংগ্রহের জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা দেশব্যাপী কর্মরত থাকেন। নির্বাচন হবে অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ। গণমাধ্যমকর্মীরা সেটা তুলে ধরবেন সারা দেশের মানুষের কাছে। তাদের কাজে অযৌক্তিক বাধা দেয়া হলে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাদের কাজে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
‘নির্বাচনের সময় প্রভাবশালী মহল বা রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক/বর্তমান মন্ত্রী-এমপিসহ নানা মানুষ এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে অনেকে পেশিশক্তি, অর্থশক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা করে। কালো টাকা ব্যবহারের কথাও শোনা যায়। আপনারা চোখ-কান খোলা রেখে বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করবেন।’
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, সব নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সব এসপি-ডিসিসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।