• নভেম্বর ২, ২০২২
  • জাতীয়
  • 242
নভেম্বরে আবারও তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়, নাম হবে ‘মানদউস’

নিউজ ডেস্কঃ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে নভেম্বরে একটি বা দুটি লঘুচাপের আশঙ্কা জানানো হয়েছে, যার একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) তালিকা অনুসারে সিত্রাংয়ের পর এই অঞ্চলে যে ঝড়টি তৈরি হবে তার নাম হবে ‘মানদউস’। নামটি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

সিত্রাংয়ের পর চলতি নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তবে সেটি মাসের কবে নাগাদ তৈরি হতে পারে বা ঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ কী, সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন আবহাওয়াবিদরা।

অক্টোবরের শুরুতেই আবহাওয়া অধিদপ্তরের তিন মাস মেয়াদি পূর্বাভাসে অক্টোবরের ‘সিত্রাং’-এর সম্ভাবনার কথা জানানো হয়।

ওই পূর্বাভাসে বলা হয়, অক্টোবরে বঙ্গোপসাগরে একটি বা দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। একই পূর্বাভাসে নভেম্বরেও এমন একটি বা দুটি লঘুচাপের আশঙ্কা জানানো হয়েছে, যার একটি রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মাসিক সভায় মঙ্গলবার নভেম্বরের আবহাওয়া পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এ মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে থাকবে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা/মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এটা পোস্ট মনসুন সিজন। এ সময়ে সাইক্লোন বা লো প্রেসার সৃষ্টি হতে হতে পারে। সিডর কিন্তু হয়েছিল ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর। চলতি মাসের মান্থলি যে ফোরকাস্ট সেখানে এটা দেয়া হয়েছে।’

তবে লঘুচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলার সময় আসেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন কোনো লো ফরমেশন (লঘুচাপ) নেই। তবে আমাদের যে ক্লাইমেট্রোলোজি তাতে দেখা যায়, এ সময় ফরমেশন হতে পারে। তা ছাড়া আরও কিছু বিষয় বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, লো প্রেসার এরিয়া সৃষ্টি হতে পারে এবং সেটা ঘূর্ণিঝড়েও রূপ নিতে পারে।’

নভেম্বরের মধ্যভাগের দিকে সাধারণত এমন সৃষ্টি হতে পারি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা তৃতীয় সপ্তাহের পরে গিয়ে তেমন দেখাও যায় না।’

মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লো ফরমেশন (লঘুচাপ) তৈরি হলে আমাদের শুরুতে সেটা ডিক্লেয়ার করতে হবে। এরপর সেটা ওয়েল মার্কড লো (সুস্পষ্ট লঘুচাপ), এরপর ডিপ্রেশন (নিম্নচাপ), ডিপ ডিপ্রেশন (গভীর নিম্নচাপ) পর্যায়গুলো পেরিয়ে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। তাই এত আগে সুনির্দিষ্টভাবে ধরনটি কেমন হতে পারে তা বলার সুযোগ নেই।’

ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) তালিকা অনুসারে সিত্রাংয়ের পর এই অঞ্চলে যে ঝড়টি তৈরি হবে তার নাম হবে ‘মানদউস’। এ নামটি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

ডব্লিউএমওর ৪৫তম বার্ষিক সভা হয় ২০১৮ সালে। ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত সেই সভায় দীর্ঘ মেয়াদে যেসব ঘূর্ণিঝড় আসবে সেগুলোর নাম চূড়ান্ত করা হয়।

উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম এরই মধ্যে নির্ধারিত করা আছে। এই অঞ্চলের ১৩টি দেশের ১৩টি করে দেয়া নামের ভিত্তিতে ১৩টি চক্রে আছে মোট ১৬৯টি ঝড়।

প্রতিটি চক্রের শুরু হয় বাংলাদেশের দেয়া নামের ঝড়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশের দেয়া নামগুলোর মধ্যে রয়েছে নিসর্গ, বিপর্যয়, অর্ণব, উপকূল, বর্ষণ, রজনী, নিশীথ, ঊর্মি, মেঘলা, সমীরণ, প্রতিকূল, সরোবর, মহানিশা। নিসর্গ এরই মধ্যে আঘাত হেনেছে উপকূলে।

ইংরেজি বর্ণক্রমিক দিক থেকে অন্য দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে থাকার কারণেই বাংলাদেশের দেয়া ঝড়ের নাম প্রতি চক্রের শুরুতে থাকে।

শীতের দাপট মধ্যে নভেম্বর থেকে

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী মধ্য নভেম্বরের পরেই দেশের তাপমাত্রা কমে যাবে।

অধিদপ্তর আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের তেঁতুলিয়ায় এখন সবচেয়ে কম তাপমাত্রা রয়েছে। সেখানকার গড় তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুর বিভাগেই সবচেয়ে আগে তাপমাত্রা ফল করে। তবে মধ্য নভেম্বরের পর সবখানেই তাপমাত্রা কমতে থাকবে।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে বৃহস্পতিবার অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ তাপমাত্রা শুষ্ক থাকতে পারে। বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়াতে ছিল ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বোচ্চ কক্সবাজারে ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।