• জুলাই ২, ২০২৩
  • লিড নিউস
  • 119
সুনামগঞ্জে বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নিউজ ডেস্ক: সুনামগঞ্জে বছরের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা এই মৌসুমে জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। এদিকে সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের টানা বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে জেলার কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাটে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষের যাতায়াতে ঘটছে বিঘ্ন আর সীমাহীন ভোগান্তি। এ ছাড়া সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা এলাকায় সড়কের বেশ কিছু অংশ প্লাবিত হওয়ায় যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সেখানে মানুষেরা নৌকায় পারাপার হচ্ছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলছেন, ভারী বৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে জেলায় পানি বেড়েছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও বৃষ্টি থামলে পানি কমবে। বড় বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই বলে আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা সুনামগঞ্জসহ সিলেট অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে বন্যার বিষয়টি বলতে পারবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেছেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভারীর বৃষ্টির কারণেই শহরের কোথাও কোথাও সামান্য পানি জমেছে। এগুলো দ্রুতই নেমে যাবে। আমরা সব এলাকাতে খোঁজ রাখছি।’

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে বলেন, মূলত বৃষ্টি বেশি হওয়ার কারণেই পানি বাড়ছে। বৃষ্টি কমলে পানিও কমবে। বড় বন্যার কোনো পূর্বাভাস নেই।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেছেন, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়েছে। জেলার কোথাও এখনো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। পানি কিছুটা বেড়েছে। সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ি ঢলে কিছু রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। তবে মানুষের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি আছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

উল্লেখ্য, সুনামগঞ্জে গত বছর জুন মাসে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। ভারী বর্ষণের সঙ্গে উজানের ঢল নেমেছিল কয়েক দিন। শহরে ঢলের পানি ঢুকে গত বছরের ১৬ জুন সকালে। সন্ধ্যা নামার আগেই পুরো শহর প্লাবিত হয়ে যায়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে সুনামগঞ্জ। বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট সেবা। ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত মাথায় নিয়ে হাজারো মানুষ ছোটেন আশ্রয়ের খোঁজে। উঁচু ভবন, আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘর, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেন মানুষ। সুনামগঞ্জ চার দিন সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। সরকারি হিসাবে জেলার কমবেশি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। মারা যান ১৫ জন। ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় ৫০ হাজার।