- আগস্ট ৭, ২০২৩
- শীর্ষ খবর
- 252
নিউজ ডেস্কঃ সিলেট মহানগরের আখালিয়ায় রবিবার রাতে কোরআন শরিফ পোড়ানোর অভিযোগে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে যারা উস্কে দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে পুলিশ। ঘটনার সময় লাইভ করা অনেককেই ইতোমধ্যে পুলিশ চিহ্নিত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোমবার (৭ আগস্ট) ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে এমনটি জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) কমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ (বিপিএম-বার, পিপিএম)।
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে সিলেট মহানগরের আখালিয়া এলাকার ধানুহাটারপাড়স্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ পরিদর্শন করেন এসএমপি কমিশনার। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এসএমপি কমিশনার উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন- পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যাদেরকে আটক করা হয়েছে তারা ছাত্রজীবনে শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন- কাল রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করে অনেকেই পরিস্থিতিতে আরও জটিল করে তুলেছিলেন। তাদের লাইভ দেখে জনতা আরও উত্তেজিত হয়েছেন। যারা ফায়দা হাসিলের উদ্দেশে এসব লাইভ করেছেন তাদের অনেককে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রবিবার (৬ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে হঠাৎ উত্তাল হয়ে পড়ে সিলেট মহানগরের আখালিয়া এলাকা। আখালিয়ার ধানুহাটারপাড়স্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের চেয়ারম্যান ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআন শরিফ পুড়ানোর অভিযোগ তুলে তাদের দুজনকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারধর করেন স্থানীয় জনতা। এসময় তারা দুজন অনেকগুলো পবিত্র কুরআন পুড়িয়েছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ উত্তেজিত হয়ে আইডিয়াল স্কুলের ফটকে জড়ো হয়ে তাদের পিটিয়ে ও পুড়িয়ে মারার হুমকি দিতে থাকেন।
খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের চেয়ারম্যান ও ওই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানটির একটি কক্ষে আটকে করে ক্ষুব্দ জনতার হাত থেকে রক্ষা করে। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।
সময় যত বাড়তে থাকে পরিস্থিতি তত উত্তপ্ত হয়। রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষ টিম সিআরটি এবং জালালাবাদ ও কোতোয়ালি থানার অতিরিক্ত পুলিশ এবং র্যাব-৯ ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
এসময় উত্তেজিনত জনতার একাংশ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
রাত সাড়ে ১২টার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধ্য হয়ে ফাঁকা গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পরে ধীরে ধীরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন উত্তেজিত স্থানীয় জনতা। রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় অভিযুক্ত দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে, শুরু থেকে বেশ কিছু ফেসবুক লাইভার পুরো ঘটনার লাইভ দিতে শুরু করেন এবং লাইভের মধ্যে তারা বেশ উস্কানিমূলক কথা বলতে থাকেন। এতে উপস্থিত জনতা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে উঠে। এতে শঙ্কিত হয়ে পড়েন সিলেটের সচেতন মানুষজন।
তাদের বক্তব্য- ফেসবুক লাইভাররা যদি এমন না করতেন তবে হয়তো পরিস্থিতি অনেকটা শান্ত থাকতো। কিন্তু অসাংবাদিক ফেসবুক লাইভাররা ঘটনাকে উস্কে দিয়েছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হতে অনেক লাইভার রবিবার রাতের তাদের পেইজের ফেসবুক লাইভ ডিলেট করে দেন। সোমবার দিনে সেসব অনেক লাইভ খুঁজে পাওয়া যায়নি।