• জানুয়ারি ৩, ২০২৪
  • শীর্ষ খবর
  • 110
পৃথিবীতে বহু সম্মানিত লোক অপরাধ করায় শাস্তি পেয়েছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিউজ ডেস্কঃ নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কারাদণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, পৃথিবীতে বহু সম্মানিত লোক আছেন যারা ক্রাইম (অপরাধ) করেন, শাস্তিও পান। আমাদের ড. মুহাম্মদ ইউনূসও ক্রিমিনাল কাজ (অপরাধ) করেছেন।

মোমেন বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের জাতীয় সম্পদ, তিনি নোবেলবিজয়ী। আমরা তাকে অত্যন্ত সম্মান করি। আমি যেটা জানি- তিনি তার শ্রমিকদের টাকা দেননি, ওদের তিনি ঠকিয়েছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে জাজমেন্ট (রায়) হয়েছে।

সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোমেন গত মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাতে সিলেট মহানগরের ধোপাদিঘিরপাড় প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি (ইউনূস) আইনি লড়াই করার, যুক্তিতর্কের সুযোগ পেয়েছেন। এরপরও এভিডেন্সের বেসিসে আইন অনুযায়ী তার বিচার হয়েছে। কোর্টের (আদালতের) ব্যাপার। এতে বাংলাদেশের কোনো অসুবিধা হবে না। কারণ প্রত্যেক দেশই আইনকে সম্মান দেয়।

বিবিসিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেদন প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, বিবিসি প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন দেয়। কোভিডের ফলে বাংলাদেশে তিন থেকে পাঁচ কোটি লোক মারা যাবে বলেও প্রতিবেদন করেছিল। এত লোক তো মারা যায়নি। মিডিয়া অনেক সময় তো চকমারি কিছু বলে, যাতে অ্যাট্রাকশন হয়। আর বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। ওনারা চকমারি কিছু দিয়েছে, আমার মনে হয় না কোনো রিপোর্টিংয়ের বেসিসে সরকার সিদ্ধান্ত নেয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিভিন্ন দেশে শত শত পত্রিকা বের হয়। সব দেশেই সরকার একটা বিচার-বিশ্লেষণ করে তাদের নিজেদের দেশের স্বার্থ ঠিক করে, ভবিষ্যৎ সংকট সম্পর্কে চিন্তা করে। আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে তাদের ভাবধারা নিয়ে চিন্তা করে। সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক, কোনো দেশের সঙ্গে আমাদের শত্রুতা নাই। সুতরাং এ ক্ষেত্রে এ ধরনের রিপোর্ট নিয়ে আমরা ওরিড (চিন্তিত) না।

তিনি বলেন, আমরা যেটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই, দেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে। এইটা যদি আমরা করতে পারি, দেশবাসী যদি এটাকে গ্রহণযোগ্য মনে করে, ওখানেই আমাদের সাকসেস (সাফল্য)।

এর আগে ড. মোমেন ইন্টারন্যাশনাল ফ্যান ক্লাব আয়োজিত মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরে প্রবাসীদের অনেক হয়রানি কমেছে। তবে একেবারে জিরো টলারেন্স হয়েছে, বলা যাবে না। অবশ্য তাদের আসা-যাওয়া অনেক সহজ হয়েছে। দুনিয়ার সব বিমানবন্দরে ঝামেলা হয়, বাংলাদেশে একটু বেশি হয়। সেটি ধাপে ধাপে কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ৩০ ডিসেম্বরকে প্রবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশের উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা চাই দেশের কোথায় কী সুযোগ রয়েছে তা প্রবাসীরা জানুক-যাতে তারা সম্পৃক্ত হতে পারে। সরকার প্রবাসীদের ৩৪টি সেবা ডিজিটাল অ্যাপের মাধ্যমে দিচ্ছে।

দেশে প্রবাসীদের হয়রানি বিশেষ করে জমি-সম্পত্তি বেদখল রুখতে র‌্যাপিড ট্রাইবুনাল গঠন ও ভূমি প্রশাসন শক্তিশালী করার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসীবান্ধব। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে স্বাধীনতাযুদ্ধ ও একাত্তর পরবর্তী দেশ গঠনে প্রবাসীরা সবসময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন। শেখ হাসিনাকেও আশ্রয়-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এই প্রবাসীরাই। প্রবাসীরা দেশপ্রেমিক-তাদের স্বদেশপ্রেম প্রগাঢ়।

প্রবাসী ব্যক্তিত্ব সেলিম মুবদার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মাহার স্বত্বাধিকারী মাহি উদ্দিন সেলিম, প্রকাশক নজরুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

সভায় প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন অনুযোগ-অভিযোগ তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের কথা জানান।