• মে ৪, ২০২৪
  • শীর্ষ খবর
  • 76
বাড়ছে নদ-নদীর পানি, বন্যার প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ

নিউজ ডেস্কঃ বিগত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের প্রায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সিলেট জেলার কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সুরমা নদী অন্য পয়েন্ট ও বাকি সব নদীতে পানি বাড়লেও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়লেও আপাতত বন্যার কোনো শঙ্কা নেই। তবে যেহেতু উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিলেটের নদ-নদীর পানি বাড়ে, তাই সবসময় বন্যা মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

এদিকে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। তাই আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। এই আকস্মিক বন্যায় উপজেলার নয়াবাড়ী, হর্নি, বাইরাখেল, গোয়াবাড়ী, ফুলবাড়ী, ডিবির হাওর, ঘিলাতৈল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর, খারুবিল, চাতলারপাড়, ডুলটিরপাড়, লক্ষ্মীপুর, আমবাড়ী, ঝিঙ্গাবাড়ী, কাঁঠালবাড়ী ও নলজুরী হাওর প্লাবিত হয়। তবে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল কমে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার নিচে চলে যায়। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সারিগোয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্য মতে, প্রাক বর্ষাকালে সুরমা নদীর কানাইঘাট এলাকার বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। সেখানে গতকাল সকাল ৬টায় ১১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার পানি ছিল। সিলেটে সুরমার বিপদসীমা ৮ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি গত বুধবার সকাল ৬টায় ছিল ৬ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে পানির বিপদসীমা হচ্ছে ১৩ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি বুধবার সকাল ৬টায় ছিল ১০ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ১১ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ১২ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদী শেওলা এলাকার বিপদসীমা ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এই নদীর পানি বুধবার সকাল ৬টায় ছিল ৮ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ৮ দশমিক ৫১ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ৯ দশমিক ৮৯ সেন্টিমিটার। সারিগোয়াইন নদীর সারিঘাট পেয়েন্টে বিপদসীমা হলো ১০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বুধবার সকাল ৬টায় পানি ছিল ৮ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ১১ দশমিক ৮৭ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ৯ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার। সারিগোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে বিপদসীমা হলো ৮ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বুধবার সকাল ৬টায় পানি ছিল ৬ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার, বৃহস্পতিবার ছিল ৮ দশমিক ১ সেন্টিমিটার ও শুক্রবার ৭ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, ‘প্রাক বর্ষাকালে বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। আর বৃষ্টি হলে নদ-নদীতে পানি বাড়াটাও স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পানি বাড়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে। যেমন বৃহস্পতিবার বৃষ্টি এবং পাহাড়ি ঢলের কারণে সারি নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। তবে এখন পানি কমে গেছে। এখন যদি ভারতে বৃষ্টি হয় তাহলে তো পাহাড়ি ঢল আসবেই। তাই আমাদের প্রাক বর্ষাকাল ও বর্ষাকালে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।’

অপরদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিস বলছে, যেহেতু প্রাক বর্ষাকাল চলছে তাই এখন প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হবে। আগামী পাঁচ দিন সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, ‘পুরোদমে বর্ষাকাল আসতে আর মাস দেড়েক বাকি আছে। এখন প্রাক বর্ষাকাল চলছে। তাই এ সময় প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকবে। আগামী পাঁচ দিন সিলেটে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।’