• মে ১৯, ২০২৪
  • রাজনীতি
  • 97
ব্যাংকে কি মাস্তান-মাফিয়ারা ঢুকবে: কাদেরকে প্রশ্ন রিজভীর

নিউজ ডেস্কঃ ব্যাংকে সাংবাদিকরা ঢুকবে কেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ব্যাংকে সাংবাদিক ঢুকবে না, তাহলে কি মাফিয়া, মাস্তান, ঋণখেলাপিরা ঢুকবে?

রোববার (১৯ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মধুখালীতে গণপিটুনিতে নিহত দুই শ্রমিকের পরিবারকে সহায়তা প্রদান পূর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভারতীয় একটি পত্রিকা লিখলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হ্যাক হয়ে গেছে।

ব্যাংক তো একটা স্টেটমেন্ট দিল, কারণ তারা সরকারের চাকরি করেন। সরকার যা বলবে তাদেরকে তাই শুনতে হবে। কিন্তু মূল ঘটনা কি আড়াল করা যাবে সাংবাদিকদের ঢুকতে না দিয়ে?
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করেন তিনি বলেন, কত দিন আপনি মুখ লুকিয়ে রাখবেন। যে নাশকতার কথা একজন অর্থনীতিবিদ বলেছেন, সেটি তো দিনকে দিন ফুটে উঠছে। এটার তো দৃষ্টান্ত আছে, কয়েক বছর আগে ৮-১০ মিলিয়ন ডলার হ্যাক হয়েছে, তারপরও বাংলাদেশ ব্যাংক তার রিপোর্ট দিতে পারেনি। সেজন্য ঢুকতে না দেওয়ার মধ্যেই তো রহস্য লুকিয়ে আছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি আর কতদিন লুকিয়ে রাখবেন। আপনার কথায় তো, দানব সরকারের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আমরা একটা শূন্য গহ্বরের ভেতর বাস করছি। আমাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। কীসের ওপর দাঁড়িয়ে আছি তার নিজেরাই বলতে পারব না। শুধু ব্যাংক থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে গেছে। এটা আমার বক্তব্য না এটা সিডিপির বক্তব্য। আমাদের জিডিপি ১২ শতাংশ নাই হয়ে গেছে। ৯২ হাজার কোটি টাকা শুধু ব্যাংক থেকে লোপাট হয়ে গেছে। লোপাটকারী কারা? এরা সবাই ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়-স্বজন কাছের লোক।

রিজার্ভ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলার উধাও করে দেওয়া হয়েছে অভিযোগে করে রিজভী বলেন, এখন তলানিতে রিজার্ভ। সরকার বলছে, ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে। অথচ যারা সচেতন মানুষ তারা বলছেন ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার আছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের ঋণ পরিশোধ করতে ৪ বিলিয়ন ডলার যাবে। রিজার্ভ তো তলানিতেই।

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, এক ক্ষুধায় জরাজীর্ণ কৃষ্ণনারীর মুখে লিপিস্টিক দিলে যা হয়, এ সরকারের উন্নয়ন হচ্ছে সেই ধরনের।

শিক্ষা, সামাজিকতা সব ধ্বংস করে ফেলছে সরকার এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দ্রুত বেশি পাস দেখানো হচ্ছে। এটি রাজনৈতিক কারণে করছে সরকার প্রধান। ছাত্রছাত্রীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এ কাজ করছে না। রাজনৈতিক বেনিফিট নিতে এ কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এক মর্মান্তিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশ তার দিন অতিক্রম করছে। অতিক্রম হওয়া দিন কোনটিই সুখকর নয়। এখানে জীবন ও সম্পদের কোনো নিরাপত্তা নেই। জনগণের মনোভাব ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য সরকার একের পর এক পন্থা অবলম্বন করছে। মধুখালীতে শ্রমিকদের পিটিয়ে হত্যা এটি একটি পন্থা। এরা মানুষকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে না। এরা মানুষের লাশ ও রক্তপাতের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে ভালোবাসে। গোটা জাতিকে একটি গোরস্তান বানানোর প্রক্রিয়ায় তারা লিপ্ত থাকে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লী গ্রামের একটি কালী মন্দিরে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থানরত নির্মাণশ্রমিকদের ওপর হামলা হয়। স্কুলের টয়লেট নির্মাণের কাজ চলছিল। সেজন্য শ্রমিকরা সেখানে ছিলেন। সেখানে পিটুনিতে দুই শ্রমিকের প্রাণ যায়। তাদের পরিবারকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়।