- জুলাই ৩০, ২০২৪
- শীর্ষ খবর
- 56
নিউজ ডেস্কঃ ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চারদিকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। জনমনে কাজ করছে ভয়। সহিংসতা ঠেকাতে কারফিউ জারি করেছে সরকার। সিলেটজুড়ে টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট। কিন্তু এসবের মাঝেও চোরাকারবারিরা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে চিনি চোরাচালান।
৫ দিনে জেলাপুলিশের অভিযানে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে ৫৮৪ বস্তা ভারতীয় চোরাই চিনি জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
সিলেট জেলাপুলিশের মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার জানান- পুলিশ সুপারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর রয়েছে জেলাপুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটে ২৩ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ৫৮৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে সংশ্লিষ্ট থানাপুলিশ। ৫০ কেজি করে বস্তাগুলোতে ২৯ হাজার ২০০ কেজি চিনি রয়েছে। যেগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা। এসব অভিযানে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি জানান- ২৩ জুলাই ভোররাত ৫টার দিকে গোলাপগঞ্জ মডেল থানাপুলিশের আভিযানে উপজেলার লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নের লক্ষণাবন্দ পশ্চিমপাড়া গ্রামের মাদারাসাবাজার যাত্রী ছাউনির সামনে থেকে একটি ট্রাকে থাকা ৩৫৯ বস্তা চিনি জব্দ করে। চোরাই চিনিভর্তি গাড়িটি কানাইঘাট থেকে আসছিলো। গন্তব্য ছিলো সিলেট শহর। অভিযানেরসময় গাড়িতে ৫ লোক ছিলেন। দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুজনকে আটক করে পুলিশ। আটকরা হলেন- চাপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তপুর গ্রামের উত্তর ইসলামপুরের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে সোহবুল ইসলাম (৩৬) ও একই জেলার শিবগঞ্জ থানার সোনামসজিদ গ্রামের গাইলুর রহমানের ছেলে শামীম (৩৫)।
২৫ জুলাই ভোররাত ৪টার দিকে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশের আভিযানে উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের মামার বাজারের পিউলির মাঠ থেকে একটি পিকআপে থাকা ৫০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে। এসময় তিনজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন- চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার তেগুরিয়া গ্রামরে বিল্লাল পাঠানের ছেলে মো. হাসান পাঠান (৩৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার সালুন্দি গ্রামের সোলেমান আলীর ছেলে আরমান আলী (১৮) ও সুনামগঞ্জ জেলার বিশম্ভরপুর থানার ভাতেরটেক গ্রামের মো. তাহের আলীর ছেলে মো. জাকির হোসেন (২৫)।
একই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশের পৃথক টিম আভিযান চালিয়ে উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের নাইন্দার হাওর গ্রামে সারি নদী থেকে নৌকায় থাকা ৭৫ বস্তা চিনি জব্দ করে। এসময় তিনজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন- গোয়াইনঘাগের পূর্ব আলীরগাঁও গ্রামের আলতাব আহমদের ছেলে শাহিন আহমদ (২২), উপর দুমকা গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে মো. মঞ্জুরুল (৩০) ও পরবল্লি গ্রামের আব্দুল সোবহানের ছেলে নিজাম উদ্দিন (৩০)।
২৬ জুলাই রাতে জৈন্তাপুর মডেল থানাপুলিশের একটি দল উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের জৈন্তাবাজারে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে চেকপোস্ট পরিচালনা করার সময় একটি পিকআপ তল্লাশি করে ৬০ বস্তা ভারতীয় চোরাই চিনি জব্দ করে। এসময় কামাল আহমেদ (২২) নামে একজনকে আটক করা হয়। তিনি উপজেলার সারিঘাট (সরফৌদ) গ্রামের মৃত বিলাল আহমদের ছেলে।
পরদিন (২৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৩টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ থানাপুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের খাগাইল সাকিন গ্রামের ইউসুফ আলী পেট্রোল পাম্পের পাশে সড়কে একটি পিকআপ তল্লাশি করে ৪০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে। এসময় গাড়িতে থাকা ৪ জন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ। আটকরা হলেন- সিলেটের জালালাবাদ থানার মেঘারগাঁওয়ের আব্দুল হাসিমের ছেলে হাবিব মিয়া (২৪), একই থানার বড়ফৌদ গ্রামের রুবু মিয়ার ছেলে খালেদ আহমেদ (১৯) ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌরীনগর গ্রামের আব্দুস ছালামের মিজানুর রহমান (৩০)।
পরে জব্দকৃত চিনির বিষয়ে ও আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিলেট জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান (বিপিএম-বার) বলেন- মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বিত হয়ে কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি স্থানীয়জন প্রতিনিধি, সুধী সমাজের নেতৃবৃন্দ ও সচেতন নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জেলাপুলিশ। অপরাধ নির্মূলে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।