• জানুয়ারি ২৫, ২০২৩
  • শীর্ষ খবর
  • 7
চাঁদা না দেওয়ায় ব্যবসায়ী রুহুল আমিনের উপর সন্ত্রাসী রফিকুল বাহিনীর হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর-লুটপাট

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজার বড়লেখার ব্যবসায়ী রুহুল আমিন। চাঁদা আদায় করতে প্রতিনিয়ত তাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে রফিক বাহিনী।

সম্প্রতি চাঁদা না দেওয়ায় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মারধর ও লুটপাট করে নিয়ে গেছে সন্ত্রাসী রফিকের লোকজন। এতে গুরুতর আহত হন রুহুল আমীন। এ ঘটনায় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর বড়লেখা থানায় একটি মারধর ও চাদাবাজির মামলা করেছেন তিনি।

মামলায় রফিকুল ইসলামসহ আরও ৮/১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও চেকবইসহ অনেক মুল্যবান সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা দাবি করে আসছিল। সম্প্রতি মোটা অঙ্কের চাঁদার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। সম্প্রতি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রফিকুল বাহিনী তাহার অফিসে ঢুকে হামলা ও ভাঙচুর করেন। সন্ত্রাসীদের মারধরে গুরুতর আহত হন তিনি। এসময় তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকদের মারধর করে নগদ টাকা, চেকবই সহ অনেক মুল্যবান সামগ্রী নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় গত ৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে রফিকুল ইসলামসহ আর গং ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে বড়লেখা থানায় একটি মারধর ও চাদাবাজির মামলা করেন তিনি। মামলা নং- জি,আর ২২/২৬।

এদিকে মামলা করার পর থেকে রফিকুল বাহিনী মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাকে মোবাইল ফোনে ও বিভিন্নভাবে প্রাননাশের হুমকি প্রধান করে আসছিল। বিগত দিনেও বড়লেখার ব্যবসায়ীরা সন্ত্রাসী বাহিনীর চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে এবং তাকে গ্রেফতারের দাবিতে একাধিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি। থানায় অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও রফিকুল ও তার বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এ কারণে দিনের পর দিন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে রফিক বাহিনী। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। এর আগে বারবার অভিযোগ করার পরও ব্যবস্থা না নেয়ায় ব্যবসায়ীরাও এখন স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও মুখ খুলতে চান না। কারণ অনেকে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ কিংবা মামলা করে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

জানা গেছে, রফিকুল ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে বড়লেখা থানায় হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরণ, নারী নির্যাতন ও অস্ত্র আইনে ১০টি এবং মৌলভীবাজার থানায় মারামারির ঘটনায় আরও ২টি মামলা রয়েছে। থানায় ১২টি মামলা থাকার পরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড়লেখার একাধিক ব্যাবসায়ী জানান, রফিকুল বাহিনী মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র মহড়া দেয় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, অগ্নিসংয়োগ ও লুটপাট চালায়। বড়লেখায় রফিকুল এতোটাই বেপরোয়া যে তাকে কেউ থামাতে পারছেন না। এমনকি একাধিক দলের দায়িত্বশীল নেতাদেরও সে মানে না। তার বিরুদ্ধে থানা পুলিশের পাশাপাশি আমাদের কাছেও বিভিন্ন ব্যক্তি অভিযোগ করেন। কিন্তু আমাদের কিছুই করার থাকে না। এসব বিষয়ে আমরা বিভিন্ন দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অনেকবারই অভিযোগ করেছি।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ারদুস হাসান বলেন, রফিকুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, অপহরণ, নারী নির্যাতন ও অস্ত্র আইনে ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলার অভিযোগপত্র পুলিশ ইতোমধ্যে আদালতে দাখিল করেছে। গ্রেফতার এড়াতে রফিকুল প্রায়ই আত্মগোপনে থাকে। তাকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। এছাড়াও থানায় তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি সাধারণ ডায়রিও আছে।

মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, মামলা ও ওয়ারেন্ট থাকলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। আইন সবার জন্য সমান, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। এমনকি রফিকুলও না। তার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলার যে কোনও থানায় ভুক্তভোগী কেউ অভিযোগ দিলে তা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হবে।