- জুলাই ৫, ২০২০
- জাতীয়
- 622
নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের মহামারি পরিস্থিতিতে দেশের প্রায় প্রতিটি অফিসের কর্মকাণ্ড ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের ওপর পূর্বের যেকোনো সময়ের চাইতে বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের স্থায়ী সংযোগের ব্যবহারমূল্য ভোক্তাপর্যায়ে ৩৫-৪০ শতাংশ বাড়তে চলেছে, সরকারের মূল্য সংযোজন করের চাপে।
শনিবার সকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত দেয়- ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ইসপাব।
সেখানে ভ্যালু চেইন সার্ভিসগুলোর ব্যবসায় সরকারের ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এর আওতায় ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্টরিয়াল কেবল- আইটিসি, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে-আইআইজি এবং নেশনওয়াইড টেলিকম্যিউনিকেশন্স ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক-এনটিটিএন পড়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের আরোপিত এ ভ্যাট প্রত্যাহার না করা হলে, ভোক্তা পর্যায়ে সংযোগ মূল্য বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান ইসপাব নেতৃবৃন্দ।
এ অবস্থায় সংগঠনটি সরকারের প্রতি বর্তমান হারে ভ্যাট নির্ধারণকে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানায়। ইসপাবের আহ্বানে সকল ইন্টারনেট অকাঠামো কোম্পানির ওপর ভ্যাট কমিয়ে শূন্য থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত রাখার সুপারিশ করা হয়।
ইসপ্যাব নেতৃবৃন্দ আইএলডিসি, আইআইজি এবং আইএসপি শিল্পকে; তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর পরিষেবা বা আইটিইএস শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানান।
সংগঠনের সভাপতি প্রেসিডেন্ট এমএ হাকিম বলেন, ইসপাব প্রদত্ত ইন্টারনেট পরিষেবায় পাঁচ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণসহ আইটিসি, আইআইজি এবং এনটিটিএন সেবাখাতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের ফলে সামগ্রিক খাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এসময় তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবসার ভ্যাট সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে সরকার উদ্যোগ না নিলে, জুলাই থেকে আমরা প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে সংযোগ বন্ধ রেখে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করব।’
‘সদস্য কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই এক ঘণ্টা পরিষেবা বন্ধ রাখার এ উদ্যোগ নেওয়া হবে’ বলেও জানান ইসপাব প্রেসিডেন্ট।
ইন্টারনেট যে আর বিলাসবহুল কোনো সেবা নয়, বরং নিত্য জীবনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ সেই দিকে আলোকপাত করে এমএ হাকিম বলেন, মহামারির এ সময়ে আমরা শিক্ষা থেকে অফিস-আদালতের কর্মকাণ্ড সবকিছু পরিচালনায় ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। প্রতিটি খাতেই, ইন্টারনেট সংযোগ এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
”এরপরেও চলতি অর্থবছরের বাজেটে আমাদের দাবি প্রতিফলিত হয়নি। এর আগে সর্বপ্রথম ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে সরকার ভ্যালু চেইন পরিষেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করে। ইন্টারনেট শিল্পখাতে মূল সমস্যার সূত্রপাত সেখান থেকেই হয়েছে” যোগ করেন তিনি।
”প্রথমবার ভ্যাট আরোপ করা হয়েছিল তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিতের প্রণীত বাজেটে। সেসময় টেলি যোগাযোগ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যাতে অংশ নেন এনবিআর এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যান। ওই বৈঠকের প্রেক্ষিতেই ইন্টারনেট পরিষেবার প্রতিটি ধাপে পাঁচ শতাংশ করে মূল্য সংযোজন কর নির্ধারণ করা হয়।”
”চলতি বাজেটে সরকার আবারও ভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট পরিষেবার নানা পর্যায়ে ১৫ শতাংশ করে ভ্যাট আরোপ করেছে। আমাদের আশঙ্কা এই ভ্যাট প্রত্যাহার না করা হলে চলমান মহামারির মধ্যেই ভোক্তাপর্যায়ে ইন্টারনেট পরিষেবার মাসিক মূল্য ৩৫-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে” বলছিলেন ইসপাব প্রেসিডেন্ট।
সংবাদ সম্মেলনে ইসপাবের মহাসচিব ইমদাদুল হক জানান, মূল্য বাড়াতে না পারলে- ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারীরা বাধ্য হয়েই ভোক্তাপর্যায়ে তাদের প্রদত্ত সংযোগের মান কমাতে পারেন। তবে আমরা কোনোভাবেই পরিষেবার মানে প্রভাব পড়ুক, তা চাইনা।