- অক্টোবর ১৮, ২০২৫
- শীর্ষ খবর
- 3

নিউজ ডেস্কঃ লিবিয়া থেকে ইতালি নৌপথে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে হবিগঞ্জের ৩৫ তরুণ নিখোঁজ রয়েছেন। তারা গত ৩০ সেপ্টেম্বর লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য নৌকায় উঠেন এবং পরিবারকে সে তথ্য জানান। নিখোঁজ সবাই হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্ধা। তাদের পরিবারে মাতম চলছে।
নিখোঁজ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়, ৩০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী হাসান আশরাফ ওরফে সামায়ূন মোল্লার মাধ্যমে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৩৫ তরুণ নৌকাযোগে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তবে ১৮ দিন পার হওয়ার পরও তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ ও জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার তরুণরা। পশ্চিমভাগ গ্রামের ৬ তরুণের পরিবারের আবেদনে দেখা যায়, তারা এখন কান্না আর দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।
পরিবারের লোকজন জানান, প্রত্যেকে প্রবাসী মোল্লার মাধ্যমে লিবিয়া ও ইতালি যাওয়ার জন্য ১৭ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত দিয়েছিলেন। কিছু পরিবার এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন, কিছু জমি ও পশু বিক্রি করে টাকা জোগাড় করেছেন। নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারগুলো অর্থনৈতিক ও মানসিক চাপের মধ্যে পড়েছেন।
হাসান আশরাফ ফেসবুকে কমেন্টে দাবি করেছেন, ৩০ সেপ্টেম্বর ৪টি নৌকায় ৮৮ জন বাংলাদেশি নৌপথে যাত্রা করেছেন। এর মধ্যে ৩টি নৌকা ইতালি পৌঁছেছে, আর একটি নৌকা নিখোঁজ হয়েছে। তিনি জানান, কেউ কেউ উদ্ধার বা চিকিৎসা পেয়েছেন, আবার কেউ জেলহাজতে থাকতে পারেন। তবে নিখোঁজদের বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।
অভিযোগ রয়েছে, হাসান আশরাফ দীর্ঘদিন ধরে লিবিয়ায় বসবাসের সুযোগ নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। জনপ্রতি ১৭ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়ে তরুণদের অবৈধ পথে ইউরোপ পাঠানোর চক্র চালাচ্ছেন তিনি। সিন্ডিকেটের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন পশ্চিমভাগ গ্রামের আব্দুল মুকিত মাস্টার।
অপরদিকে, আব্দুল মুকিত মাস্টার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “গ্রামের কিছু লোকজন তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।”
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবিড় রঞ্জন তালুকদার বলেন, সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেছে কিছু তরুণ অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবারের আবেগ ও উদ্বেগের চিত্র স্থানীয় গ্রামে স্পষ্ট। নিখোঁজ সাব্বিরের মা ছবি বুকে নিয়ে বারবার মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন। একইভাবে অন্যান্য পরিবারের লোকজনও দিশেহারা। তারা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তানের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের আশ্বাস চান।