• জুলাই ২৯, ২০২০
  • শীর্ষ খবর
  • 1000
৫০ লাখ টাকার‘মঞ্জুরি চিঠি’হাতে পেলেন ডা. মঈনের পরিবার

নিউজ ডেস্কঃ করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থেকে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম চিকিৎসক সিলেটের মঈন উদ্দিনের পরিবার ক্ষতিপূরণের ৫০ লাখ টাকার ‘মঞ্জুরি চিঠি’হাতে পেয়েছেন।

করোনাক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া প্রথম চিকিৎসক সিলেটের মঈন উদ্দিনের স্ত্রী ডা. চৌধুরী রিফাত জাহান। করোনা রোগীদের সেবা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থেকে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়াদের মধ্যে প্রথম ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক মো. মঈন উদ্দিনের পরিবার।

জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত সোমবার (২৭ জুলাই) ৫০ লাখ টাকা মঞ্জুরি দিতে চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ বিভাগেরই প্রধান হিসাব কর্মকর্তার কাছে। অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবু ইউসুফ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, তাঁর স্ত্রীর কাছে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করবেন অর্থ বিভাগের ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার (ডিডিও)।

এ বিষয়ে মঈন উদ্দিনের স্ত্রী ডা. চৌধুরী রিফাত জাহান বলেন, চিঠি হাতে পেয়েছি। তবে টাকা পেতে আরও কিছু প্রক্রিয়া আছে, সেগুলো আগে শেষ করতে হবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থেকে যারা নিজেরাও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাঁদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করেছে সরকার। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সেবায় সরাসরি কর্মরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ মাঠ প্রশাসন, আইন–শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্য কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে গত ২৩ এপ্রিল অর্থ বিভাগ যে পরিপত্র জারি করে, সেটি অনুসরণ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।

পরিপত্রে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি চাকরিজীবী যাঁরা নিজেরা আক্রান্ত হবেন বা মারা যাবেন, তাঁদের জন্য গ্রেড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৫ লাখ টাকা ও মারা গেলে ২৫ লাখ টাকা, ১০ থেকে ১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও মারা গেলে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১ থেকে নবম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ১০ লাখ টাকা এবং মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা পাবেন। চলতি ২০২০–২১ অর্থবছরের বাজেটে ‘স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাবদ ক্ষতিপূরণের জন্য বিশেষ অনুদান’ খাতে যে ৫০০ কোটি টাবা বরাদ্দ রয়েছে, তা থেকে এ ব্যয় করা হবে।

এদিকে, সিলেটের চিকিৎসক মঈন উদ্দিন ছিলেন পঞ্চম গ্রেডের সরকারি কর্মচারী। গত ২৭ এপ্রিল ক্ষতিপূরণের প্রথম আবেদন করেন মঈন উদ্দীনের স্ত্রী চিকিৎসক চৌধুরী রিফাত জাহান। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে চৌধুরী রিফাত জাহানের আবেদনপত্রে সুপারিশ করেন এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মো.মইনুল হক।

উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিল সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দীনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। অবস্থার অবনতি ঘটলে ৭ এপ্রিল তাঁকে সিলেট নগরীর শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আইসোলেশনে রাখা হয়। সেখান থেকে পরবর্তী সময়ে পরিবারের সিদ্বান্ত অনুযায়ী তাঁকে ঢাকায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি গত ১৫ এপ্রিল শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।