- জানুয়ারি ১০, ২০২১
- লিড নিউস
- 351
নিউজ ডেস্কঃ সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণের মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় আরও দুদিন সময় দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার নির্ধারিত দিনে বাদীপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী আগামী মঙ্গলবার দিন নির্ধারণ করে দেন।
এর আগে ৩ জানুয়ারি মামলার অভিযোগ গঠনের প্রথম শুনানি শেষে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওই তারিখেও বাদীপক্ষের আইনজীবী অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় সময় প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে মামলার নথিপত্র বাদীপক্ষ না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আবার আবেদন করেন। আদালত বাদীপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রাশিদা সাঈদা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের আগে বাদীপক্ষ অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় দুদিন সময় প্রার্থনা করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। ১২ জানুয়ারি বাদীপক্ষ থেকে অভিযোগপত্রে রাজি বা নারাজি জানানোর পর মামলার পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে
আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় বাদীপক্ষকে সময় দেওয়ার আগে মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আট আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবী অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেকের জামিন আবেদন করলে বিচারক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আদালতে অভিযোগপত্র পর্যালোচনার সময় প্রার্থনার আবেদনে উল্লেখ করেন, ‘এজাহারকারী এখন পর্যন্ত মামলার জাবেদা নকল (সার্টিফাই কপি) পাননি। এ কারণে চার্জশিটের বিষয়ে এজাহারকারী ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক মতামত দিতে অপারগ হওয়ায় চার্জশিট পর্যালোচনার বিষয়ে সময় দেওয়া অতি আবশ্যক। অন্যথায় এজাহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।’
আদালতে দাখিল করা আবেদনে মামলার অভিযোগপত্র, সিজারলিস্ট, জিম্মানামা, স্ক্যাচমেপ, ইনডেক্স, ইনডেক্সের সূচি ও ব্যাখ্যা, মেডিকেল রিপোর্ট, ডিএনএ রিপোর্ট, আসামিদের দোষ স্বীকারমূলক জবানবন্দি, ২২ ধারার জবানবন্দি, ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও আসামিদের রিমান্ড আবেদনের জাবেদা নকল বাদীপক্ষকে দেওয়ার কথা বলা হয়।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আদালত পুলিশকে অভিযোগপত্রসহ সব নথিপত্র হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন। নথিপত্র হাতে পেলে পর্যালোচনা করে দেখব অভিযোগপত্রসহ সব নথিপত্রে বাদীর বিচারপ্রাপ্তিতে কোনো অসংগতি আছে কি না। অসংগতি থাকলে অভিযোগপত্রে নারাজি দেওয়া হবে। ১২ জানুয়ারি এ বিষয়ে আদালতকে লিখিতভাবে জানাব।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেপ্তারের পর তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
গত ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে ধর্ষণে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে আছেন।