• মার্চ ১৫, ২০২১
  • জাতীয়
  • 408
করোনা : স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে ইউরোপ-আমেরিকার মতো অবস্থা হবে

নিউজ ডেস্কঃ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলে বা না মানলে করোনা ভাইরাস ইউরোপ-আমেরিকার মতো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে সে পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই না।

আমরা বাংলাদেশকে ভালো রাখতে চাই। মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে আবারও কঠোর হতে হবে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

সোমবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।

করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বেশ সফলতা পেয়েছে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই তার দিকনির্দেশনার জন্য। একইসঙ্গে সচিব, ডাক্তারসহ সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই, যাদের ত্যাগের ও চেষ্টার মাধ্যমে আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।

‘আমরা টিকাও ভালো করে দিতে সক্ষম হয়েছি। যে জন্য দেশে-বিদেশে প্রশংসাও পাচ্ছি। ব্লুমবার্গ, জাতিসংঘের মহাসচিব, ডাব্লিউএইচও, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান প্রশংসা করেছেন। ’

তিনি বলেন, ১৫-২০ দিন আগেও করোনা কমতে কমতে ২ দশমিক ৩ এ নেমেছিল, এর মানে প্রায় শেষ হওয়ার কথা। আমাদের মৃত্যুর হার নেমেছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশে। আমাদের সুস্থতার হারও অনেক বেড়েছিল। এই পর্যায়ে দেখা গেলো করোনা বেড়ে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণের পার্সেন্টেজ এখন ৭ শতাংশে উঠে এসেছে। মৃত্যুর হারও বেড়েছে। গতকালও ১৮ জন মৃত্যুবরণ করেছে। আমরা খুবই আতঙ্কিত এবং উদ্বিগ্ন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সচিব-ডিজিদের নিয়ে জুম মিটিং করেছি। সেখানে সারা বাংলাদেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের কর্মকর্তাদের নিয়ে মিটিং করেছি, জানার চেষ্টা করেছি কেন এটা বাড়ছে। আমাদের কাছে খবর হলো লোকে স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তারা মনে করে করোনা এখন বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। তারা কক্সবাজার, সিলেট, চট্টগ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কোনো মাস্ক পরছে না।

‘তারা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না, পিকনিক চলছে, বিয়ে ধুমছে চলছে। আমি দু’দিন আগে একটি বিয়েতে গেলাম, আত্মীয়ের বিয়ে বলে গেছি। সেখানে দেখলাম হাজার হাজার লোক। একটা লোকের মুখেও মাস্ক পরা নেই। এরকম পরিস্থিতি সারাদেশে চলছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। ’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মাঠ পর্যায় থেকে জানলাম, লোকে করোনার টেস্ট করতে চাচ্ছে না। কারণ তারা টেস্ট করলে নাকি লকডাউনে চলে যেতে পারে। সেজন্য তারা টেস্ট করছে না। বাজার-ঘাট, অফিস-আদালত যেখানে নো মাস্ক নো সার্ভিসের একটা পলিসি ছিলে সেটাকেও মানুষ অবহেলা করছে। এ কারণে করোনা বাড়ছে, যেটা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য মঙ্গলজনক নয়।

‘আমরা ইতোমধ্যে কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। যেহেতু হাসপাতালে রোগী আগের চেয়ে বেড়ে গেছে, সারাদেশে প্রাইভেট এবং সরকারি মিলে ১৯শ হয়ে গেছে। ফলে ৫শর বেশি রোগী বেড়ে গেছে। এবং খুব দ্রুত বাড়ছে। ’

তিনি বলেন, করোনা যাতে তাড়াতাড়ি আমরা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারি সেজন্য ডিসিদের কাছে চিঠি আমরাও দিয়েছি এবং মন্ত্রিসভা থেকেও দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা কিছু সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রয়োগ করে।

হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু রোগী নেই, তাই অনেক হাসপাতালে করোনা ইউনিট ছিল না। আবারো প্রতিটি হাসপাতালে করোনা ইউনিটের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। সেখানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন আছে। কারণ আমরা প্রায় ৯০টি নতুন হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাগিয়েছি। শুধু আইসিইউ বা সিসিইউতে নয়, আমরা অক্সিজেন লাইন ওয়ার্ডেও টেনে নিয়েছি। কাজেই আইসিইউ ফ্যাসিলিটি একজন রোগী ওয়ার্ডে বসেও পাবে। ওষুধের কোনো অভাব নেই, যথেষ্ট অক্সিজেন আছে, ডাক্তার-নার্স আছেন।

জাতীয় দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা যে অনুষ্ঠানগুলো করবো সেগুলো যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হয় নির্দেশ দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যবিধি প্রণয়ন করে। তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি পালন করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

‘আমরা অনুষ্ঠান করতে গিয়ে যেন হাসতালের সেবা ব্যাহত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেবা সঠিকভাবে দিতে হবে। হাসপাতাল- ক্লিনিকের কার্যক্রম ঠিক রাখতে হবে। ’