• জুন ১৭, ২০২১
  • লিড নিউস
  • 296
সিলেটে ট্রিপল মার্ডার: আলিমা ছিলেন ৫ মাসের গর্ভবতী

নিউজ ডেস্কঃ সিলেটের গোয়াইনঘাটে ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিহত গৃহবধূ আলেমার শরীরে নয়টি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। এগুলোর একটিই তার মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট ছিল বলে জানিয়েছেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক।

এরপরও ঘাতক এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। সেইসঙ্গে মৃত্যু ঘটে আলিমার গর্ভজাত পাঁচ মাসের কন্যা সন্তানেরও।

ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেসনিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আলিমার গর্ভে পাঁচ মাসের কন্যা সন্তান ছিল। একটি আঘাতে আলিমার লিভার কেটে গিয়ে গর্ভজাত সন্তানেরও মৃত্যু হয়। বুকের আঘাতে পাজর কেটে হার্টে গিয়ে লেগেছে। মাথার আঘাতটিও ছিল গুরুতর। এসব আঘাতের যেকোনো একটিই মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট ছিল।

এছাড়া আট বছর বয়সী ছেলে মিজানের ঘাড়ের দিক থেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাড় ও খাদ্যনালী কেটে চামড়ায় ঝুলেছিল। চার বছর বয়সী মেয়ে তানিশার মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন মিলেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন এ চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ আল হেলাল।

এদিকে নিহত আলিমার বাবা আয়ুব আলীও জানিয়েছেন, আলিমা গর্ভবতী ছিল। গর্ভে পাঁচ থেকে সাত মাসের সন্তান রয়েছে।

মরদেহগুলো সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ বলেন, দুই শিশুসহ মায়ের শরীরে অন্তত ১৭টি কোপ পাওয়া গেছে মর্মে সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন। এরমধ্যে গৃহবধূ আলিমার শরীরে নয়টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তন্মধ্যে মাথায় দু’টি গুরুতর আঘাত। বাম বাহুতে একটি, বুকে একটি আঘাতে পাজর কেটে গেছে। এছাড়া পেট ও পিঠে পাঁচটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মাথায়, লিভার ও হার্ট পর্যন্ত আঘাত পাওয়া গেছে। প্রত্যেকটা আঘাতই গুরুতর।

তিনি আরও বলেন, আট বছরের শিশু সন্তান মিজানের ডান গালে একটি, থুঁতনিতে একটি, বাম কানের নিচ থেকে ডান কানের কাঁধের নিচ পর্যন্ত গভীর আঘাত করা হয়েছে। চার বছরের শিশু মেয়ের মাথায় দু’টি গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। আরেকটি ঘাড়ে। সেটি ছিল মারাত্মক। তাছাড়া আহত হিফজুরের মাথায় একটি ও পায়ে দু’টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেগুলো হালকা জখম। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে নিহতদের মরদেহ আলিমার বাবা আয়ুব আলীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়া গর্ভজাত সন্তান হত্যার বিষয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেন, গর্ভজাত সন্তান হত্যার বিষয়টি এ তিন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তাতে চারটি হত্যার ঘটনা হবে না।

বুধবার (১৬ জুন) ভোরে সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলায় বসতঘর থেকে দুই শিশুসহ গৃহবধূর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা হলেন- উপজেলার ফতেহপুরের বিন্নাকান্দি ফুলেরতল গ্রামের হিজবুর রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগম (৩৫), ছেলে মিজান (৮) ও মেয়ে তানিশা (৫)। এ সময় ঘর থেকে গুরুতর অবস্থায় গৃহকর্তা হিজবুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার মধ্যরাতে নিহত আলিমা বেগমের বাবা আয়ুব আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার দেখানো হয়নি।