• সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১
  • শীর্ষ খবর
  • 285
সিলেটে সকালে ভিড়, বেলা বাড়তেই টিকাকেন্দ্র ফাঁকা

নিউজ ডেস্কঃ সিলেটে করোনার গণটিকার দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রমে সকালে ব্যাপক ভিড় ছিল। তবে বেলা বাড়তেই টিকাকেন্দ্রগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। এর আগে গত ৭ আগস্ট সিলেট সিটি করপোরেশন ও উপজেলা পর্যায়ে মোট ৮১ হাজার ৩৯৭ জন প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে টিকা নিয়েছেন ৫৮ হাজার ৬৪৪ ও সিটি করপোরেশন এলাকায় গণটিকা নিয়েছেন ২২ হাজার ৭৫৩ জন।

তবে আজ মঙ্গলবার বেলা তিনটা পর্যন্ত গণটিকার দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রমে কতজন টিকা নিয়েছেন সে তথ্য জানা যায়নি।

মঙ্গলবার সকালে ও দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রে দেখা গেছে, সকালের দিকে টিকাগ্রহীতাদের ভিড় থাকলেও দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে কেন্দ্রগুলো ফাঁকা হয়ে যায়। সকাল থেকেই কেন্দ্রগুলোতে টিকাকার্ড এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে হাজির হন টিকাগ্রহীতারা।

সকাল ১০টার দিকে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার টিকাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, পুরুষ ও নারীরা আলাদা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। টিকা নিতে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে মধ্যবয়স্ক থেকে তরুণদের সংখ্যা বেশি। তাঁরা টিকাকার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে টিকা নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। টিকাকেন্দ্রের মধ্যে পুরুষ ও নারীদের জন্য দুটি আলাদা বুথে টিকা দেওয়া হচ্ছে।

টিকা নেওয়ার আগে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিরা স্বেচ্ছাসেবীর হাতে টিকার কার্ড এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি প্রদর্শন করছেন। পরে সেগুলোতে স্বেচ্ছাসেবীরা নম্বর দিয়ে আবার তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

টিকাকেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবীর দায়িত্বে থাকা রতন মল্লিক বলেন, ৭ আগস্ট যাঁরা প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছিলেন, তাঁদেরই দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আরও দুদিন টিকাদান কার্যক্রম চলবে। টিকা গ্রহণের জন্য আগে থেকেই যাঁরা যে কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন, তাঁদের সে কেন্দ্র আসার আহ্বান জানানো হয়েছিল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে।

‌টিকা নিতে আসা মণিপুরি রাজবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রাজন পাল বলেন, ‘আগের মাসে একই তারিখে টিকা নিয়েছিলাম। সেদিন টিকাকার্ড দেওয়া হয়েছিল। সে টিকাকার্ড আজ ফটোকপি করে নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। কার্ড দেওয়ার পর লাইনে দাঁড়িয়ে পরে টিকা দিয়েছি, কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।

নগরের মিরাবাজার এলাকার শহাজালাল জামেয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রেও মঙ্গলবার সকাল থেকে টিকার কার্যক্রম শুরু হয়। ওই কেন্দ্রে বেলা একটার দিকে গিয়ে দেখা গেছে, টিকাগ্রহীতাদের তেমন ভিড় নেই।

গত ৭ আগস্ট গণটিকা কার্যক্রমে প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী আজ মঙ্গলবারও প্রতিটি কেন্দ্রে টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
টিকাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা সজীব অলমিক বলেন, যাঁরা ৭ আগস্ট টিকা নিয়েছিলেন, তাঁদেরই টিকা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য টিকা নির্দিষ্ট পরিমাণেই রয়েছে। টিকাকার্ড হারিয়ে গেলে কী করতে হবে জনতে চাইলে তিনি বলেন, টিকাকার্ড হারিয়েছেন, এমন কেউ কেন্দ্রে আসেননি। তবে কার্ড হারিয়ে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্রের দুটি ফটোকপি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। সেগুলো আমরা যাচাই–বাছাই করেই দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেব।

সিলেট সিটি করপোরেশরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত জানান, সকালে প্রথম দিকে কিছুটা ভিড় থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে ভিড় কমে আসে। ৭ আগস্ট গণটিকা কার্যক্রমে প্রতিটি কেন্দ্রে ৩০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী আজ মঙ্গলবারও প্রতিটি কেন্দ্রে টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা দুইটা পর্যন্ত মির্জাজাঙ্গাল এলাকার টিকাকেন্দ্রে ২৭৮ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় ৮১টি কেন্দ্রে করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা কেন্দ্রগুলোতে ৭, ৮ ও ৯ আগস্ট টিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের সেসব কেন্দ্রেই টিকা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এরপরও যদি কোনো কারণে কেউ নির্দিষ্ট তারিখে টিকা নিতে না পারেন, তাঁকে পরবর্তী তারিখে কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যেও যদি কেউ টিকা নিতে না পারেন, পরে তাঁদের সিটি করপোরেশনে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হবে। টিকাকার্ড হারিয়ে গেলেও আমরা যাচাই-বাছাই করে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’

এর আগে ৭ আগস্ট সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলায় ১০০টি কেন্দ্রে তিনটি করে ৩০০টি বুথ এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৮১টি কেন্দ্রে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল। উপজেলা পর্যায়ে এক দিন গণটিকার কার্যক্রম চললেও সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় দুদিন বৃদ্ধি করা হয়েছিল।