- অক্টোবর ১৭, ২০২১
- শীর্ষ খবর
- 386
নিউজ ডেস্কঃ কুমিল্লার ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুরে সিলেট নগরের দুটি পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে এজাহারভুক্ত ১২ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানা সূত্রে জানা গেছে, থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী জামাল বাদী হয়ে শনিবার রাত ১২টায় মামলাটি করেন। মামলায় পূজামণ্ডপে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকসহ সরকারি কাজে নিয়োজিত পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়। মামলার পরপরই পুলিশ শনিবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে রোববার ভোর ছয়টা পর্যন্ত নগরের জালালিয়া, নতুনবাজার, আখালিয়া বড়বাড়ি ও মোহাম্মদীয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবার বেলা সোয়া দুইটায় নগরের হাওলাদারপাড়া এলাকার ভাটি বাংলা অগ্রদূত যুব সংঘ কমিটি ও উদীয়মান ভাটি বাংলা সর্বজনীন পূজা কমিটির মণ্ডপে কয়েক শ লোক মিছিল সহকারে হামলা চালান। হামলাকারীরা মণ্ডপের পাশে হিন্দুদের বাড়িতেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ বাধা দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। হামলায় মণ্ডপ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুলিশের বাধায় হামলাকারীরা প্রতিমা ভাঙচুর করতে পারেননি। তবে মন্দিরের ভেতরে থাকা কয়েকজন ও দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা আহত হন।
হাওলাদারপাড়া এলাকা সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানার অন্তর্ভুক্ত। সেখানকার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলায় কারা জড়িত ছিলেন, সেটা বের করতে পুলিশ আশপাশের এলাকার বাড়ি ও রাস্তায় থাকা সব কটি সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করছে। সেখানে থেকে হামলাকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে পুলিশ এখন অভিযান চালাচ্ছে।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান জানান, এ ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
জকিগঞ্জে আরও তিনজন গ্রেপ্তার
সিলেটের জকিগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারে বুধবার রাতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে। ঘটনার রাত ও পরদিন সকালে পুলিশ তিনজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করে। আজ ভোরে কালীগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জকিগঞ্জ থানার ওসি আবুল কাসেম বলেন, পুলিশ বিভিন্ন সূত্রে হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্ত করে অভিযান চালাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও কালীগঞ্জ বাজার ও আশপাশে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।
কুমিল্লার ঘটনার জেরে কালীগঞ্জ বাজারে বুধবার এশার নামাজের পর কয়েকটি মসজিদ থেকে মুসল্লিদের খণ্ড খণ্ড মিছিল বের হয়। এরপর তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমী আক্তার, জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী ও জকিগঞ্জ থানার ওসি আবুল কাসেম সেখানে যান। পরে তাঁরা কালীগঞ্জ বাজারের কাছে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন। এ সময় হঠাৎ ইউপি কার্যালয়ের সামনে থাকা ইউএনও, এএসপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ওসির চারটি গাড়িতে অতর্কিতে ঢিল ছুড়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
পুলিশসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, একপর্যায়ে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন কিছু ব্যক্তি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিক্ষোভকারীদের নিবৃত্ত করতে গিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল শিকদার বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।