• ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
  • লিড নিউস
  • 477
সিলেটে আবারও হকারের দখলে ফুটপাত

নিউজ ডেস্কঃ চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সিলেট নগরের ব্যস্ততম বন্দরবাজার এলাকার ফুটপাত থেকে হকারদের সরিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসন করেছিল সিটি করপোরেশন ও মহানগর পুলিশ। এরপর পথচারীদের নির্বিঘ্নে হাঁটাচলার সুযোগ তৈরি করে দিতে ‘হকারমুক্ত এলাকা’ লেখা সাইনবোর্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তবে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবার ওই স্থানগুলো হকারদের দখলে চলে গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বন্দরবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিলেট জেলা পরিষদ ফটক থেকে সুরমা মার্কেট পর্যন্ত শতাধিক ভাসমান ব্যবসায়ী ভ্যানের ওপর ফল, সবজি, মাছ, জুতা ও কাপড়ের পসরা নিয়ে বসেছে। কেউ কেউ আবার মাটিতে কাপড় বিছিয়ে অথবা কাঁধে করে টুকরি নিয়ে মালামাল বিক্রি করছেন। দুর্গাকুমার পাঠশালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনেও একই চিত্র দেখা গেছে।

সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ও মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ গত জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ৭০ হকারকে লালদিঘিরপাড় এলাকায় পুনর্বাসন করেছে। এই হকারেরা নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকার বিভিন্ন ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা করতেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বন্দরবাজার এলাকার প্রধান ডাকঘর, লালবাজার ও সিটি পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, বিকেলের দিকে এসব এলাকায় হকারের সংখ্যা কম থাকলেও সন্ধ্যা থেকে হকারদের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যায় এ তিন এলাকায় অন্তত শতাধিক হকারকে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে। ফুটপাতের পাশাপাশি মূল সড়ক দখল করেও হকারদের জমজমাট ব্যবসা করতে দেখা গেছে। এতে পথচারীরা বাধ্য হয়ে ফুটপাতের বদলে সড়ক ধরে হাঁটছেন।

বন্দরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী ও পথচারীরা জানিয়েছেন, ফুটপাত দখলমুক্ত করার পর তুলনামূলকভাবে যানজট কিছুটা কমে গিয়েছিল। এ সময় পথচারীরাও শান্তিতে হাঁটাচলা করতে পারতেন। তবে কয়েক মাস ধরে পুনরায় ফুটপাত বেদখল হয়ে যাওয়ায় আগের সমস্যা ধীরে ধীরে ফিরে আসছে। এখন ফুটপাতে চলতে গিয়ে পথচারীদের আবার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

বন্দরবাজার এলাকার ব্যবসায়ী মাহতাব উদ্দিন বলেন, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু অভিযানের পরপরই আবার ফুটপাত হকারদের দখলে চলে যায়। তবে আগের চেয়ে এখন বন্দরবাজার এলাকার ফুটপাতে হকারের সংখ্যা কমেছে। আগে তাঁরা ফুটপাতে স্থাপনা তৈরি করে দখল নিয়েছিল। তবে এখন অস্থায়ী হিসেবে মালামাল বেচাকেনা করে। মূলত দুপুরের পর থেকে হকারেরা পসরা বসাতে শুরু করেন। সন্ধ্যার পর পুরো ফুটপাত হকারদের দখলে চলে যায়।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি যানজট নিরসনের জন্য সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ও মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ গত জানুয়ারি মাসে ১ হাজার ৭০ হকারকে লালদিঘিরপাড় এলাকায় পুনর্বাসন করেছে। এই হকারেরা নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার ও চৌহাট্টা এলাকার বিভিন্ন ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা করতেন। হকারদের পুনর্বাসন করার পর থেকে দখলমুক্ত করা এলাকায় হকারদের বসতে দেওয়া হয় না। এসব স্থান দখলমুক্ত রাখতে সিটি করপোরেশন নিয়মিত অভিযান চালায়। তবে রাত ১০টার পর থেকে হকারদের ফুটপাতে বসে ব্যবসা করতে খুব একটা বাধা দেওয়া হয় না বলে সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে।

সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান বলেন, বন্দরবাজার নগরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা। এ এলাকাসহ কয়েকটি এলাকার হকারদের লালদিঘিরপাড় এলাকায় পুনর্বাসিত করা হয়েছে। যানজট নিরসন ও পথচারীদের নির্বিঘ্নে চলাচল নিশ্চিত করতে হকারদের বন্দরবাজারের মতো ব্যস্ত এলাকায় বসতে দেওয়া হয় না। প্রায় প্রতিদিনই সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তবে অনেক সময় অভিযানের পর হকারেরা আবারও ফুটপাতে বসার চেষ্টা করেন। বিষয়টি ভবিষ্যতে আরও কঠোরভাবে দেখা হবে।