• মে ৪, ২০২০
  • জাতীয়
  • 519
২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে মৃত্যু, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার

নিউজ ডেস্কঃ মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৮২ জনের মৃত্যু হলো। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৮৮ জন। এতে দেশে ভাইরাসটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ হাজার ১৪৩ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ১৪৭ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন এক হাজার ২১০ জন।

সোমবার (৪ মে) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ছয় হাজার ৩১৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ছয় হাজার ২৬০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ৮৭ হাজার ৬৯৪টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও ৬৮৮ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি গতকালের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ১৪৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও পাঁচজন। এ নিয়ে মারা গেছেন ১৮২ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও ১৪৭ জন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ২১০ জন।

গত রোববারের (৩ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, বিগত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে দুজনের। আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন।

সোমবারের বুলেটিনে নতুন করে মারা যাওয়া পাঁচজনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তারা সবাই পুরুষ। তিনজন ঢাকার, একজন সিলেট ও একজন ময়মনসিংহের বাসিন্দা। তিনজন ষাটোর্ধ্ব, একজন পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং একজন ত্রিশোর্ধ্ব।

গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন, তাদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ১৩ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ১১ জন, ঢাকা মহানগর হাসপাতালের সাত জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের ১৩ জন, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালের চার জন, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৪ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগের অন্যান্য হাসপাতালের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের সাত জন, রাজশাহী বিভাগের তিন জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ১৭ জন, রংপুর বিভাগের চার জন এবং সিএমএইচের ১৪ জন রয়েছেন।

বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন নেয়া হয়েছে ৯০ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশন রয়েছেন এক হাজার ৬৩৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯১ জন এবং এ পর্যন্ত মোট ছাড়া পেয়েছেন এক হাজার ১৭৩ জন।

রাজধানীসহ সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার ৬৩৮টি। তন্মধ্যে রাজধানী ঢাকায় রয়েছে তিন হাজার ৯৪৪টি এবং রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে রয়েছে পাঁচ হাজার ৬৯৪টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় হোম এবং প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৭৪২ জনকে এবং এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে এক লাখ ৯৫ হাজার ৩৩৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন ২৮ হাজার ৫৪৮ জন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ হাজার ৪০১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪১ হাজার ৯৩৩ জন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। তবে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ। তবে সাড়ে ১১ লাখ রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।

প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। যদিও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় খুলেছে পোশাক কারখানা। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি-না, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা।