- মার্চ ১৫, ২০২২
- শিক্ষাঙ্গন
- 432
নিউজ ডেস্কঃ চা অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পানীয়। তবে বর্তমান সময়ে চায়ের থেকে পানীয় জাতীয় পণ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে কয়েক গুণ। তাই চা নিয়ে গবেষণা করে দেশে প্রথমবারের মতো চা থেকে কোমল পানীয় হিসেবে টি-কোলা (পানীয়) উদ্ভাবন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি (এফইটি) বিভাগের একদল গবেষক চা থেকে পানীয় উদ্ভাবনের ওপর গবেষণা করে এ সফলতা পেয়েছেন।
গবেষণা দলের সদস্যরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি (এফইটি) বিভাগের অধ্যাপক ও টি-কোলা গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমেদ, এফইটি বিভাগের এম ইঞ্জিনিয়ারিং থিসিসে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী নাবিল নওরোজ বৈশাখ এবং একই বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মো. আল ইমরান জাকারিয়া।
অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ‘চা প্রদর্শনী- ১৮’ তে চায়ের বহুমুখী ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেখানে বলেছিলেন, চা থেকে চা ছাড়াও বিভিন্ন ফ্লেভারযুক্ত প্রসাধনী সামগ্রী বিশেষ করে সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, টি-কোলা, চায়ের আচার প্রভৃতি উৎপাদন করা সম্ভব। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে চা থেকে কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস (টি কোলা) তৈরি করতে ২০১৯ সাল থেকে আমরা গবেষণা শুরু করি। প্রায় তিন বছর গবেষণা শেষে এ বছর আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছি।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে শিশু-কিশোরদের মাঝে চা এর প্রতি কিছুটা অনীহা কাজ করলেও কার্বোনেটেড বেভারেজের প্রতি তাদের আগ্রহ অনেক বেশি। এছাড়া গরমের দিনে চা থেকেও কোমল পানীয়ের প্রতি বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে মানুষরা।
তবে এ ড্রিঙ্কসগুলো আমাদের শরীরে তেমন উপকার সাধন করে না, অনেক ক্ষেত্রে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এমন একটি কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস তৈরির পরিকল্পনা করি যাতে চা এর সকল গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য দরকার ছিল পর্যাপ্ত অর্থায়ন। সে লক্ষ্যে একটি গবেষণা প্রস্তাব (রিসার্স প্রপোজাল) তৈরি করে ‘সাস্ট রিসার্চ সেন্টার’ এ পাঠায়। পরবর্তীতে প্রস্তাবটি অনুমোদন পেলে আমরা কাজ শুরু করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে গবেষণাটি শেষ করেছি। তাতে একটি মানসম্পন্ন, স্বাস্থ্যকর এবং আকর্ষণীয় ‘টি কোলা’ প্রস্তুত করতে সক্ষম হই। এতে আমরা দুই ধরনের ‘ব্ল্যাক টি’ এবং ‘গ্রিন টি’ উভয় নিয়ে কোমল পানীয় তৈরি করি।
চা থেকে তৈরি এই পানীয়ের খাদ্যগুণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের তৈরি ড্রিঙ্কসগুলোতে কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস করে চায়ের উপকারী উপাদান পলিফেনল, ক্যাফেইন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাদ্যগুণ ইত্যাদি বিদ্যমান রয়েছে। এছাড়া ভোক্তাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য আমরা সেনসরি অ্যানালাইসিস টেস্ট করেছি। সেখানেও আমরা আশানুরূপ ফলাফল পেয়েছি। আশা করি, সামনে আমরা একটি স্বাস্থ্যকর বেভারেজ পাব।