- এপ্রিল ২৭, ২০২২
- লিড নিউস
- 293
মোসাইদ রাহাত, সুনামগঞ্জঃ একদিকে নতুন ফসল তোলার আনন্দ, তার সঙ্গে আবার ঈদ। এবার তাই এক জম্পেশ ঈদের আশা করেছিলেন হাওর অঞ্চলের মানুষেরা। কিন্তু সেই আশা ভেসে গেল শেষ পর্যন্ত বানের জলে।
ভারতের মেঘালয়ে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় থেকে ধেয়ে আসা ঢলে ইতোমধ্যেই তলিয়ে গেছে ৩২টি হাওর। কেউ কেউ পানি আসার আগেই পাকা ধান ঘরে তুলতে পারলেও অসংখ্য কৃষকের বোরো ধান দেখতে দেখতে তলিয়ে গেছে। আবার পানি চলে আসায় তড়িঘড়ি করে আধা পাকা ধানই কেটে এনেছেন এমন কৃষকের সংখ্যাও কম নয়।
কাগজে কলমে ৫ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির ধান পানিতে নষ্ট হওয়ার কথা বললেও বাস্তবে তার পরিমাণ ২০ হাজার হেক্টর বলে দাবি করেছে বিভিন্ন পক্ষ।
সর্বশেষ সোমবার সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের আহসানপুর এলাকার বাঁধ ভেঙে হালির হাওরে থাকা পাকা ধান এমনকি কাটা ও মাড়াই করা ধানও রাতারাতি ডুবে গেছে।
আহসানপুর এলাকার কৃষক মহিমুর রহমান বলেন, ‘ধান চাষ করেছিলাম ১২ একর জমিতে। মাত্র ১০০ মণ ধান ঘরে তুলেছি। আরও ২৫০ মণ খলায় রাখা ছিল শুকানোর লাগি। কিন্তু পানি আইয়া সব ভাসাইয়া নিছেগি। আমরার তাই এইবার ঈদ নাই।’
অন্যদিকে দেখার হাওরের কৃষক নূর মিয়া বলেন, ‘ধান কাঁচাই কাটছি। যে টাকা দিয়া ধান লাগাইছি সব নষ্ট। আশা করছিলাম, ছেলেটারে শার্ট প্যান্ট কিনিয়া দিমু। কিন্তু বৈশাখ আইয়া সব নিছেগি। আবার আমার অনেক ধান গরমেও জ্বইল্লা গেছে।’
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ নূর আহমদ বলেন, ‘আমি ১২ একর জমিতে ধান লাগাইছি। কিন্তু বেশিরভাগ ধান কাঁচাই কেটে আনছি। এবার যাদের ধান গেছে তাদের এবার কোনো ঈদ নেই। হাওরের ঈদ বানের জলে ভেসে গেছে।’
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, ‘আজকে পর্যন্ত হাওরে আমার ৯০ ভাগ ধান কাটা শেষ। তবে হাওরের বাইরে আরও ৪২ হাজার হেক্টর জমির ধান রয়েছে। সেগুলো কাটা হয়েছে মাত্র ২৮ শতাংশ। ধানগুলো পাকতে সময় লাগে তাই এগুলো এখনও মাঠে রয়ে গেছে।’