• ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২১
  • লিড নিউস
  • 266
কানাইঘাট পৌরসভা নির্বাচন: বিদ্রোহী’ নিয়ে ভয়ে আ.লীগ

নিউজ ডেস্কঃ তৃতীয় ধাপে গত ৩০ জানুয়ারি সিলেটে হয়ে যাওয়া গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে দুটোতেই মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী। একাধিক ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী থাকায় তখন বেকায়দায় পড়তে হয়েছিল দলীয় প্রার্থীকে। প্রায় একই ধরনের বেকায়দায় পড়েছেন কানাইঘাট পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী লুৎফুর রহমান। আগামীকাল রোববার চতুর্থ ধাপে হতে যাওয়া এই পৌরসভার ভোটে তাঁর বিপরীতে দলের একজন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী রয়েছেন।

কানাইঘাটে মেয়র পদে মোট ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান, বিএনপির প্রার্থী ২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. শরিফুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী নজির আহমদ, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নিজাম উদ্দিন, জাতীয় পার্টির নেতা হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী মো. সুহেল আমীন এবং জামায়াত ঘরানার হিসেবে পরিচিত কুয়েতপ্রবাসী কাওছার আহমেদ।

দলের চেয়ে এখানে ব্যক্তি, আঞ্চলিকতা ও গোষ্ঠীভিত্তিক বিভাজন জয়-পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে স্থানীয় ব্যক্তিরা মনে করছেন। তাঁদের ভাষ্য, স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় এখানে প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তির যোগ্যতাই ভোটের মাঠে বেশি প্রাধান্য পাবে।

মো. নিজাম উদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ফলে তাঁর দলীয় সমর্থক-কর্মী ও ভোটব্যাংক রয়েছে। পাশাপাশি তিনি বর্তমান মেয়র হওয়ায় ভোটারদের সঙ্গেও তাঁর বেশ জনসম্পৃক্ততা রয়েছে। এর ফলে অনেকটাই চাপে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এ ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন বিএনপির প্রার্থী।

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী লুৎফুর রহমান বলেন, ‘বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আমার কোনো সমস্যা হবে না। তিনি (মো. নিজাম উদ্দিন) অনেক দিন ধরেই আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত। দলের কেউ তাঁর সঙ্গে নেই। আমি নিজের বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’

পৌর মেয়র মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু সুকৌশলে আমাকে মনোনয়নবঞ্চিত করা হয়েছে। তবে দলমত-নির্বিশেষে কানাইঘাট পৌরবাসী আমাকে এখন ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। আমার বিজয় সুনিশ্চিত।’

বিএনপির প্রার্থী মো. শরিফুল হক বলেন, ‘যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতেই পৌরবাসী মেয়র নির্বাচন করবেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আমি সুবিধা পাব, বিষয়টা এমন নয়। যোগ্যতা ও দক্ষতার কারণেই পৌরবাসী আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে আমি মনে করি। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী নজির আহমদ বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছি, ভোটাররা সাড়া দিচ্ছেন। আমার অবস্থা ভালো। আশা করছি বিজয় আসবেই।’ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সুহেল আমীন বলেন, ‘আমি ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছি। একসময় আওয়ামী লীগ করতাম। এখন জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি। আশা করছি সব পর্যায়ের ভোটারের সমর্থন পাব।’ আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কাওছার আহমেদ বলেন, ‘বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। ভোটাররা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন বিপুলভাবে।’

কানাইঘাট পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হাসনাত। তিনি জানান, কানাইঘাট পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৪২৭ জন। এখানে মেয়র পদে ৬ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।