• অক্টোবর ২৭, ২০২১
  • লিড নিউস
  • 253
সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ৪৭ কিলোমিটারে নয়টি স্ট্যান্ড

নিউজ ডেস্কঃ সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সিলেট থেকে তামাবিল স্থলবন্দর পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটার সড়কে রয়েছে ইজিবাইকের ৯টি স্ট্যান্ড। একটি স্ট্যান্ড থেকে আরেক স্ট্যান্ড পর্যন্ত ভেঙে ভেঙে চলছে যাত্রী পরিবহন। ইজিবাইকগুলো নিয়ম মেনে না চলায় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, আঞ্চলিক মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ। এসব নিবন্ধনবিহীন নিষিদ্ধ ইজিবাইকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলানো হচ্ছে।

জাফলং থেকে পাথর বোঝাই করে সিলেট আসা ট্রাকচালক হানিফ মিয়া বলেন, সড়কের স্থানে স্থানে ইজিবাইকে সয়লাব। এসব ইজিবাইকগুলো দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। ইজিবাইকগুলো ধীরগতিতে চলাচল করে আর খেয়ালখুশিমতো যাত্রী পরিবহন করে। এ ছাড়া ইজিবাইকের চালকেরা অদক্ষ। তাঁরা হঠাৎ যানগুলো মোড় ঘুরিয়ে নেন। মহাসড়কে ইজিবাইক নিষিদ্ধ হলেও যাত্রী পরিবহন বন্ধ না করায় দুর্ঘটনার দায়ভার তাঁদের ওপর পড়ছে।

গত শুক্রবার ও শনিবার আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সিলেট-তামাবিল পর্যন্ত প্রায় ৪৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ইজিবাইকের স্ট্যান্ড। সড়ক দখল করে স্ট্যান্ডগুলো বসানো হয়েছে। স্ট্যান্ডগুলো হলো টিলাগড়-মেজরটিলা, মেজরটিলা-শাহপরান, শাহপরান-সুরমা গেট, সুরমা গেট-বটেশ্বর, বটেশ্বর-চিকনাগুল, চিকনাগুল-হরিপুর, হরিপুর-দরবস্ত, দরবস্ত-জৈন্তাপুর, জৈন্তাপুর-তামাবিল।

যাত্রীরা বলেন, ধরা যাক, কোনো যাত্রী টিলাগড় থেকে শাহপরান পর্যন্ত যাবেন। তাকে প্রথমে টিলাগড় থেকে মেজরটিলা পর্যন্ত আসতে হবে। পরে মেজরটিলা থেকে আবার ইজিবাইকে উঠতে হবে। প্রতিটি স্ট্যান্ডে ইজিবাইকের ভাড়া থাকে নির্ধারিত। অনেক মানুষ এভাবে ভেঙে ভেঙে চলাচল করছে। যাত্রীরা ইজিবাইক ভাড়া নিয়ে গ্রামের ভেতরেও যেতে পারে।

চিকনাগুল বাজার থেকে হরিপুর বাজারের উদ্দেশে যাওয়া ইজিবাইকের যাত্রী আবির আহমদ বলেন, স্থানীয়ভাবে ইজিবাইকগুলো গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁরা। সহজলভ্য ও গ্রামের অভ্যন্তরে এগুলো চলাচল করায় তাঁদের (যাত্রীদের) সুবিধা হয়। তবে এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, এ আঞ্চলিক মহাসড়কটি দিয়েই সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও জৈন্তাপুরের লালাখালে যাতায়াত করে থাকে পর্যটকবাহী যানবাহন। এ ছাড়া তামাবিল স্থলবন্দর ও জাফলং থেকে বালু ও পাথর পরিবহন করা ভারী যানবাহন প্রতিনিয়ত চলাচল করে। চলে যাত্রীবাহী বাসও। ধীরগতির ইজিবাইক মহাসড়ক দখল করে চলাচল করায় ঘটছে দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় সড়কে খেয়ালখুশিমতো যাত্রী ওঠানামা করায় ইজিবাইকগুলো। এ ছাড়া অনেক ইজিবাইকচালকের আসনে বসে আছে কিশোর।

জাফলং ও জৈন্তাপুরে পর্যটক পরিবহন করা প্রাইভেট কারের চালক জুয়েল আহমদ বলেন, ইজিবাইকগুলোর জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো যায় না। এসব ইজিবাইকের স্ট্যান্ড মহাসড়কের বিভিন্ন বাজার এলাকার সড়কজুড়ে বসানো হয়। এতে যানজট লেগে পর্যটক ও তাঁদের সময়ের অপচয় হচ্ছে।

মেজরটিলা এলাকা থেকে শাহপরান এলাকায় চলাচলকারী ইজিবাইকচালক মামুন আহমদ বলেন, ‘মহানগর এলাকায় আমাদের প্রবেশ নিষেধ। আবার মহাসড়কেও চলাচল করায় নিষেধাজ্ঞা। এমন অবস্থায় আমাদের যাওয়ার পথ নেই। অনেকটা বাধ্য হয়েই স্ট্যান্ড বসিয়ে আশপাশের এলাকায় যাত্রী পরিবহন করছি।’

সিলেটের তামাবিল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, শুক্রবার নিরাপদ দিবস উপলক্ষে সব মহলের অংশগ্রহণে তাঁরা একটি সভা করেছেন। এতে আঞ্চলিক মহাসড়কটি নিরাপদ রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ছিল—এ মহাসড়কে নিবন্ধনবিহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ করা। ইজিবাইকের কারণে মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি আরও বলেন, তাঁরা নিয়মিত মহাসড়কে ইজিবাইক চলাচল বন্ধ করতে অভিযান চালাচ্ছেন। ইজিবাইকচালকদের গ্রামের অভ্যন্তরে যাত্রী পরিবহনের জন্য স্ট্যান্ডগুলোতে প্রচারণা চালানো হবে।