• মার্চ ২০, ২০২২
  • জাতীয়
  • 191
লঞ্চে ধাক্কা দেওয়া সেই কার্গোসহ ৯ জন আটক

নিউজ ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চে ধাক্কা দেওয়া সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন কার্গো জাহাজ এমভি রূপসীকে আটক করেছে নৌ পুলিশ। রোববার (২০ মার্চ) দুপুরে চর সৈয়দপুরের আল আমিননগর এলাকায় দুর্ঘটনার পরপরই কার্গোটি মুন্সিগঞ্জের হোসেন দ্য ডকইয়ার্ডে নোঙ্গর করে। সেখান থেকেই কার্গোটি আটক করে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মনিরুজ্জামান মনির জানান, কার্গো জাহাজ এমভি রূপসীকে আটক করা হয়েছে। এর মাস্টার, চালকসহ সব কর্মী পালিয়েছে। তবে জাহাজটি থেকে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় লঞ্চডুবি

লঞ্চডুবির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় নৌকার মাঝি সৈয়দ আলী বলেন, আমি দূর থেকে দেখলাম- বড় জাহাজটা যাত্রীবাহী লঞ্চটারে ধাক্কা দিতে দিতে ডুবাইয়া দিল। কিছু লোক লাফ দিয়া পানিতে পড়তে পারলেও ভেতরের যাত্রীরা লাফ দিতে পারে নাই। লঞ্চসহ নিচে তলাইয়া গেছে। কয়েকজন হয়ত ডুব দিয়া উঠতে পারছে, কিন্তু বেশিরভাগই পানির নিচে ডুইব্বা গেছে।

তীরে নোঙর করা কার্গো জাহাজের কয়েকজন শ্রমিক বলেন, চোখের সামনে দেখলাম বড় জাহাজটি ছোট লঞ্চটিকে ডুবিয়ে দিল। মূলত যেখানে লঞ্চটি ডুবেছে সেখানে কেনো যাত্রী পারাপারের ঘাট নেই। কিছুটা দূরে কয়লা ঘাট। সেখানে লঞ্চ থামে ও পারাপারের নৌকা আছে। একদিকে ঘাট নাই, অন্যদিকে নদীর মাঝখানে হওয়ায় আশপাশে কোনো নৌকা বা ট্রলার ছিল না। থাকলে অনেককেই বাঁচানো যেত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, দোষটা মূলত যাত্রীবাহী লঞ্চের চালকেরই বেশি। তিনি লঞ্চটা হঠাৎ টার্ন করে আড়াআড়ি করতেই পেছনে থাকা জাহাজটি ধাক্কা দেয়। তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পেছনে এত বড় মালবাহী জাহাজটা লঞ্চের চালক দেখেনি, এটা কোনো কথা হলো? ওই জাহাজের গতিও বেশি ছিল। তাই লঞ্চটি ডানে-বায়ে ঘোরানোর আগে লঞ্চের চালকের উচিত ছিল বিষয়টি মাথায় রাখা। মালবাহী জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করলেও সেটির গতি কমতে বেশ সময় লাগে।

এদিকে নদীর দুই পাড়ে থাকা শত শত মানুষ অভিযোগ করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জগামী যাত্রীবাহী লঞ্চগুলি মান্ধাতা আমলের এবং ছোট আকারের। এসব লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী বহন করা হয় বিআইডব্লিউটিআইয়ের নাকের ডগায়। কারণ এটির কার্যালয় সেন্ট্রাল নদী বন্দরেই অবস্থিত। বহু বছর ধরে এই রুটে অনেক ব্যবসায়ী নতুন ও আধুনিক লঞ্চ সংযোজন করতে চেয়েছে, তবে লঞ্চ মালিক সমিতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। এসব লঞ্চে নেই পর্যাপ্ত জীবনরক্ষাকারী বয়া বা লাইফ জ্যাকেট। লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটলে কিংবা ঈদের মৌসুম আসলেই সেগুলো রঙ করে নতুন বানানো হয়।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা আরও বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলেই শুধু তদন্ত কমিটি হয়। কিন্তু সারা বছর যাদের এসব দেখভাল করার কথা তারা নীরবতা পালন করেন, আর প্রাণ হারিয়ে পরিবারগুলো নিস্ব হয়।