• মে ৯, ২০২২
  • লিড নিউস
  • 342
সিলেটে সয়াবিনের সঙ্গে আটা-ময়দা নেওয়ার শর্ত দিচ্ছেন দোকানিরা

নিউজ ডেস্কঃ সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার বাসিন্দা শাহ সিকন্দর শাকির গতকাল রোববার রাতে গিয়েছিলেন মুদিদোকানে সয়াবিন তেল কিনতে। কিন্তু তেল থাকার পরও দোকানি তাঁকে তেল দেননি বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি দাবি করেন, কয়েকটি মুদিদোকান ঘুরে তিনি একটি সুপারশপে যান তেল কিনতে। সেখানে তাঁকে বলা হয়, অন্য কোনো বাজার না নিলে শুধু তেল তাঁরা বিক্রি করেন না। আরও কয়েকটি সুপারশপেও একই কথা বলা হয়। এ নিয়ে তিনি ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করার কথা বললে শুধু দুই লিটার তেল কিনতে পারেন।

আমানা সুপারশপের ব্যবসায়ী আল আমিনের দাবি, তেল সরবরাহ না করায় তাঁদের কাছে তেল নেই।

দোকানিদের ভাষ্য, সয়াবিন তেলের সরবরাহের ঘাটতির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। তেল সরবরাহকারী সব প্রতিষ্ঠানেরই অন্য মালামাল রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলো তেল নিতে হলে ব্যবসায়ীদের তেলের পাশাপাশি অন্য মালামাল বুঝিয়ে দিচ্ছেন। এ কারণে দোকানিরাও বাধ্য হয়ে ক্রেতাদের তেলের সঙ্গে অন্য মালামাল কেনার শর্ত দিচ্ছেন।

সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল, মাছুদিঘীর পাড়, লামাবাজার, তালতলা, রিকাবীবাজার, মদিনা মার্কেট, জিন্দাবাজার, জল্লারপার, আম্বরখানা ও বারুতখানা এলাকার বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

অন্তত ১০ মুদিদোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রমজানের মাঝামাঝি থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে থেকে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তেল নিতে হলে একই প্রতিষ্ঠানের আটা, ময়দা, সুজিসহ অন্য মালামাল নিতে হয়েছে। এখন ঈদের পর বর্ধিত দাম হওয়ায় বাজারে তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। নতুন করে সরবরাহ করা হচ্ছে না। পাইকারি বাজারে গিয়ে অনেক ব্যবসায়ী তেলের সঙ্গে অন্য মালামাল নিতে বলছেন। এ জন্য তাঁরাও তেলের সঙ্গে অন্য মালামাল দিচ্ছেন।

মাছুদিঘীর পাড় এলাকার ব্যবসায়ী তারেক আহমদ বলেন, ঈদের আগে থেকে তেল সরবরাহ নেই। রোজার সময় একটি কোম্পানির তেল নিতে হলে আটা, ময়দা, সুজি—এগুলো নিতে হয়েছে। ওই মালামাল কম চলে। তেল বিক্রি হলেও ওই মালামাল আটকে যাওয়ার শঙ্কা আছে। এ জন্য ক্রেতাদের তেলের সঙ্গে এই মালামাল নেওয়ার শর্ত দিচ্ছেন তাঁরা।

তেল সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের ডিলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। এমন সুযোগে প্রতিষ্ঠানগুলোও তেলের পাশাপাশি কম বিক্রয় হওয়া মালামাল আমাদের নিতে বাধ্য করছে। আমরাও বাধ্য হয়ে খুচরা দোকানিদের তেলের পাশাপাশি অন্য মালামাল দিচ্ছি। এখন সয়াবিন তেল বিক্রি করা প্রতিষ্ঠানগুলো শর্ষের তেল নিতে বাধ্য করছে। আমরা সেগুলো নিয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের দিচ্ছি। তাঁরা আবার সাধারণ ক্রেতাদের দিচ্ছেন।’

নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার বাসিন্দা জিতেন্দ্র রায় বলেন, সোমবার সকালে সয়াবিন তেল নিতে মহল্লার সাতটি দোকানে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো দোকানেই সয়াবিন তেল পাননি। পরে বাধ্য হয়ে শর্ষের তেল নিয়ে ঘরে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।

জল্লারপাড় এলাকার বাসিন্দা জিয়া ইসলাম বলেন, বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গেলে দোকানি বলেছেন, তেলের সঙ্গে আটা আর সুজি নিতে হবে। পরে পাঁচ লিটার তেলের সঙ্গে দুই কেজি আটা ও এক কেজি সুজি নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হয়েছে।