• জুন ২৪, ২০২২
  • জাতীয়
  • 222
ওমিক্রনের ‘শঙ্কায়’ বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

নিউজ ডেস্কঃ শারীরিক জটিলতা থাকা সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের ওমিক্রন সংক্রমণ এড়াতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।

শুক্রবার ২৪ জুন বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন ‘সংক্রমণ এড়াতে রিস্ক থাকা সত্ত্বেও খালেদা জিয়াকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে খালেদা জিয়াকে বিকেলে বা সন্ধ্যায় বাসায় নেয়ার কথা রয়েছে। বাসায় প্রতিনিয়ত মনিটরিংয়ে রাখা হবে। জটিলতা দেখা দিলে হাসপাতালে আনা হবে।’

মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার কিডনির জটিলতা কিছুটা সমাধান করা গেলেও, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’

বিকেল ৫.৩৫ মিনিটে বিএনপি নেত্রী হাসপাতাল থেকে তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার পথে রওনা হন। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি সেখানে পৌঁছান।

গত ১১ জুন মধ্য রাতে বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার হার্টে রিং পরানোর কথা জানানো হয় দলের পক্ষ থেকে।

হাসপাতালে নেয়ার পর বিএনপি আবার তার নেত্রীকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি করে। তবে এর আগের তিনবারের মতো এবারও সে দাবি অগ্রাহ্য করে সরকার।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা স্থগিত হওয়ার পর বিদেশে যেতে পারবেন না-এমন শর্তে বিএনপি নেত্রীকে মুক্তি দেয়া হয়।

এরপর করোনায় আক্রান্ত হলে প্রথমবার ২৭ এপ্রিল থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ৫৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১২ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত ২৬ দিন এবং তৃতীয় দফায় ১৩ নভেম্বর থেকে ৮১ দিন তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে থাকলেন।

তৃতীয় দফায় ৮১ দিন হাসপাতালে থাকার সময় বিএনপি নেত্রীর জীবন সংকটাপন্ন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তার লিভার সিরোসিস হয়েছে এবং দেশে এর কোনো চিকিৎসা নেই- এমন দাবি করা হয় বিএনপি নেত্রীর চিকিৎসায় গঠন করা মেডিক্যাল বোর্ডের পক্ষ থেকেও। এমনও বলা হয়, বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্তে দেরি হলে ক্ষতি হয়ে যাবে।

তবে সরকার তার অবস্থানে অটল থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি এভারকেয়ার থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরে যান বিএনপি নেত্রী। সে সময় দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছিল। সে সময়ও তার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনার ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণের আশঙ্কায় ঝুঁকি সত্ত্বেও বিএনপি নেত্রীকে বাসায় নেয়া হচ্ছে।

এবারও বাসায় ফিরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘উনার (বিএনপি নেত্রী) ব্লাডিংয়ের চান্স, সিরোসিস অব লিভার, সেটা কিন্তু রয়ে গেছে। এটার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা শুধু উনার ব্লিডিং স্পটগুলোকে মাইগ্রেশন করে বন্ধ করে রেখেছি। সেগুলোর গত ছয় মাসে কী অবস্থা হয়েছে, আমরা কিন্তু ফলোআপ করতে পারিনি। এখনকার কন্ডিশনের জন্য ওনার ফলোআপ করাটা আরও রিস্কি হয়ে যাচ্ছে।’

দেশের বাইরে নিয়ে গেলে বিএনপি নেত্রী সুস্থ হয়ে যাবেন- এমন কথা বলে এই চিকিৎসক বলেন, ‘তবে এখনও খালেদা জিয়ার ফ্লাই করার মত শারীরিক সক্ষমতা আছে। বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করলে হয়ত তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’