• জুলাই ৭, ২০২২
  • লিড নিউস
  • 215
২০ দিনেও বাড়ি ফিরতে পারেননি তারা

জগন্নাথপুর প্রতিনিধিঃ গত ১৭ জুন তাঁর বাড়িতে বন্যার পানি উঠলে তিনি শহরের সোনালী ব্যাংকের তৃতীয়তলায় এক কোচিং সেন্টারে আশ্রয় নেন জগন্নাথপুর পৌর শহরের হবিবনগর এলাকার ধীরেন শব্দকর। এর পর ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও তিনি বাড়ি ফিরতে পারেননি। ঘর থেকে এখনো বন্যার পানি না নামায় পরিবার নিয়ে এখনো ওই কোচিং সেন্টারেই থাকছেন ধীরেন শব্দকর।

ধীরেনের মতো অনেকেই এখনো আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে পারেননি। শহরের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার পানি ধীরগতিতে নামায় তাঁদের বাধ্য হয়ে আশ্রয়কেন্দ্র গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে।

জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে কথা হয় এলাইছ মিয়া নামের সত্তোরোর্ধ বৃদ্ধের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এত বড় বন্যা যেমন দেখিনি, এতদিন পানি থাকতেও দেখিনি। ইবারের বন্যা খুব কষ্ট দিল। পানি না কমায় বাড়িঘরে যাইতাম পাররান (পারছি) না।’

এই আশ্রয়কেন্দ্রে শুরুর দিকে তিন শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। এর মধ্যে অনেকেই বাড়ি ফিরলেও ৫০ জন এখনো আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন।

জগন্নাথপুর উপজেলা নাগরিক ফোরাম যুগ্ম আহ্বায়ক রুমানুল হক বলেন, জগন্নাথপুর পৌর ভবনে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ শতাধিক মানুষের মধ্যে এখনো শতাধিক মানুষ বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। বন্যার পানি ধীরগতিতে নামছে। তাই সবার বাড়িতে ফেরার অবস্থা নেই। এ কারণে এসব লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে পারছেন না।

হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, নদনদী, খালবিল সব কিছু ভরাট হয়ে গেছে। আবার অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধের কারণেও পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। এ তারণে বন্যার পানি স্থির হয়ে আছে বলে দাবি করেন তিনি।

জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, বন্যার পানি সব জায়গায় কানায় কানায় পরিপূর্ণ। এ ছাড়া হাওরে গ্রামীণ সড়ক, বেড়িবাঁধের কারণে পানি যাতায়াত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই ধীরগতিতে পানি নামছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, নদীর ধারণক্ষমতা কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। স্লুইসগেট দিয়ে ধীরে ধীরে পানি নামছে। সরকারিভাবে ইতিমধ্যে ১২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে। বেসরকারিভাবেও প্রচুর ত্রাণ তৎপরতা চলছে। এখানে ত্রাণের কোনো সংকট নেই।