• জুলাই ১৩, ২০২২
  • জাতীয়
  • 265
প্রতিটি খুনের বিচার হবে: যুবদল নেতা হত্যা নিয়ে ওবায়দুল কাদের

নিউজ ডেস্কঃ যশোরে যুবদল নেতাকে হত্যার পেছনে যিনি বা যারাই থাকুন না কেন বিচার হবে, নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, আওয়ামী লীগ আমলে অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি দোষারোপের মিথ্যা রাজনীতি করছে বলেও অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকার পতনের আন্দোলনের যে হুমকি দিয়েছেন, সেটিরও জবাব দেন কাদের। বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। সংবিধান মেনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে। এমনকি কেউ ষড়যন্ত্র করলে তার দাঁত ভাঙা জবাব দেয়া হবে।

বুধবার এক বিৃবতিতে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আগের দিন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এই বিবৃতি দেয়া হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের নাজির শংকরপুরে আকবরের মোড় এলাকায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান ধনি।

এই হত্যায় সরকারকে দায়ী করেছেন মির্জা ফখরুল। বলেছেন, সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী বলেই ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে আওয়ামী লীগ মরণকামড় দিচ্ছে।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, প্রতিটি হত্যার বিচার হবে বাংলাদেশের মাটিতে। এই সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির প্রতিদিনের চিরাচরিত ভাষায় দেয়া মিথ্যাচারে ভরপুর অপরাজনীতির অংশ।… বদিউজ্জামান হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেয়া বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতিতে যে বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তা সত্যের অপলাপ। বিচারাধীন কোনো বিষয়ে মন্তব্য করা আইনসিদ্ধ নয়। কারও রাজনৈতিক পরিচয় কোনো হত্যাকারীর অপরাধকে আড়াল করতে পারে না।’

হত্যাকারী বা অপরাধী যে-ই হোক না কেন, তার বিচার হবেই জানিয়ে কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার ও অপরাধীদের শাস্তি ভোগ সেটাই প্রমাণ করে। এমনকি সরকার দলীয় পদে থেকেও বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার কারণে অনেকেই আজ সাজাভোগ করছে।’

মির্জা ফখরুল সরকার পতনের যে কথা বলেছেন, তেমন বক্তব্য দিয়ে কোনো লাভ নেই- এমন কথাও বলেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে সরকার পতনের হুমকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তিত হবে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার কোনো ব্যত্যয় ঘটাতে চাইলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে।’

সহিংস রক্তপাতের মধ্য দিয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের প্রতিবাদও জানান কাদের।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবে আইনের শাসনের প্রতি পরিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধাশীল এবং সাংবিধানিক বিধিবিধান অনুযায়ী নির্বাচন ছাড়া আওয়ামী লীগ কখনও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেনি। স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবিধানিক পন্থায় স্বেচ্ছায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের একমাত্র নজির সৃষ্টি করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল বলেও মন্তব্য করেন কাদের।

বলেন, ‘এমনকি স্বৈরাচার জিয়া বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষায় প্রথমে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং পরে তা আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথকে রুদ্ধ করেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা দ্বিতীয় আর একটি নেই।’

বেগম খালেদা জিয়াও ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে অগণিত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী হত্যার পথ বেছে নিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘বিএনপির শাসনামল হত্যা-ক্যু, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল বাংলাদেশ। বিএনপি তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় একুশে আগস্টের মতো ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল।’