• জানুয়ারি ২, ২০২৩
  • রাজনীতি
  • 291
বিএনপি রূপরেখা দেওয়ায় আ.লীগের মুখ বন্ধ: আমীর খসরু

নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটি দফা একেকটি ভিন্ন চিন্তা ভাবনা থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে।

সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা’ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন কোনদিকে যাবে তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে আছে। দেশ কোন পথে যাবে সেটা নিয়েও দ্বিধায় আছে। বিদেশিরাও উদ্বিগ্ন। কারণ বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিস্ট হয়ে গেছে। এ গভীর পদ্ধতি থেকে দেশ কিভাবে বের হবে? সে প্রেক্ষাপটে কিন্তু আজকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। যার মূল উদ্যোক্তা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান।

তিনি বলেন, আজকে নব্বই শতাংশ রাজনীতিবিদ বক্স থেকে বেরিয়ে চিন্তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তারা বিজনেস মনে করে শুধু। কিন্তু বিশ্ব যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা ভাবে না। সেই জায়াগাটা উপলব্ধি করেই কিন্তু তারেক রহমান এই রূপরেখা দিয়েছেন। যেমন তার বাবা জিয়াউর রহমান সাহসী কাজের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। মাঝে স্বৈরাচার সরকার দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যায়।

খসরু বলেন, আজকে বাংলাদেশকে আবারও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। যা অনেক গভীরে চলে গেছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বিএনপি তুলে ধরেছে বলে সাধারণ মানুষ বলছে। বিদেশিদের কাছে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন না হলে বাংলাদেশ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। দেশকে গভীর গর্ত থেকে তুলে আনতে হলে ২৭ দফার বিকল্প নেই। এজন্য বিএনপির প্রতিশ্রুতি থাকা দরকার। বিএনপি ২৭ দফা দেওয়ার পর আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ প্রত্যেকটি দফা একেকটি চিন্তা ভাবনা থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ফিলোসফি।

আমীর খসরু বলেন, আজকে বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি শুরু হয়েছে। দেশের ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী সংসদে বসে আছে। তারা তো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। আজকে দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা তো তারাই করছে। আজকে দেশের অর্থনীতি আওয়ামী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং পরিবর্তন দরকার। আপার হাউসের পরিবর্তন দরকার। যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী তারা সেখানে যাবেন। তখনই দেশের স্থিতিশীলতা আসবে।

রেইনবো নেশনের ব্যাখ্যা করে আমীর খসরু বলেন, রেইনবো নেশন হলো- আজকে নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এখানে অনেক ধর্মের ও বর্ণের মানুষ বাস করে। সবার ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য বা সম্মান জানানোর জন্য রেইনবো নেশন। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদকে মূলে রেখে নতুনভাবে রেইনবো নেশনের কথা বলা হচ্ছে। যা নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই ধারণা মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। রেইনবো নেশন সারাবিশ্বকে বোঝায়।

ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে রূপরেখা দিয়েছে তা সময়োপযোগী। আসলে দেশের যে অবস্থা তার মেরামতের কোনো বিকল্প নেই। দেশ ও জনগণকে রক্ষার লক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাস্তব চিন্তা ধারা থেকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা দিয়েছেন।

বিকল্পধারার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী বলেন, গণতন্ত্র হলো বুর্জোয়া পদ্ধতি। আজকে ক্ষমতাসীনরা দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট করেছে। তারা লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করছে। আজকে দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে হলে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের বিকল্প নাই।

স্বাগত বক্তব্যে জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের যে রূপরেখা ঘোষণা করেছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী। এটি বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার যে উদ্দেশ্য সেটা বাস্তবায়ন হবে। আমাদের লক্ষ্য জনগণের কল্যাণে কাজ করা। ক্ষমতা ভোগ করা নয়। এরই মধ্যে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। সবাই প্রশংসা করছেন।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, লাইফ সাপোর্টে থাকা গণতন্ত্র ও লক্ষ্যচ্যুত দেশকে পুনরুদ্ধার করতে হলে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের বিকল্প নেই। বিএনপি যে রূপরেখা দিয়েছে এটা জাতির মুক্তির সোপান।

ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক আবুল কালাম সরকার, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একেএম মতিনুর রহমান, উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, অধ্যাপক খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, কৃষিবিদ অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি।

সভায় উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য দেন-খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এসএম শরিফুল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রইস উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, ড. শরিফুল ইসলাম দুলু, অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, মো. হারুন অর রশিদ, জাসাসের জাহিদুল আলম হিটো, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রকৌশলী মাহবুব আলম, কৃষিবিদ কেএম সানোয়ার আলম, শফিকুল ইসলাম, প্রকৌশলী মেহেদী হাসান সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা।