• এপ্রিল ৩০, ২০২৩
  • শীর্ষ খবর
  • 191
হবিগঞ্জে ব্রি-২৮ ও ২৯ ধান আবাদ করে বিপাকে চাষিরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের চাষিরা উচ্চফলনশীল ধান ব্রি-২৮ ও ২৯ জাত আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন। বৈশাখী এ বোরো ধান কাটতে গিয়ে দেখতে পান, জমির প্রায় ৪০ শতাংশ ধান শিষের ভেতরে চাল নেই। এ পরিস্থিতিতে এবারের বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা বারবার চাষিদের অনুরোধ করেছি তাঁরা যেন ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধানবীজ রোপণ না করেন। তারপরও অনেক কৃষক অতি ফলনের আশায় তা রোপণ করেন। এবার বোরো ধানে বীজ সমস্যার কারণে ব্লাস্ট রোগসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।’

জেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর হবিগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমি থেকে ৫ দশমিক ২ মেট্রিক টন হিসাবে এবার ৬ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় কৃষি কার্যালয় থেকে।

তবে কয়েকজন প্রান্তিক চাষি বলেছেন, ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান আবাদ করায় গত বছর থেকে এবার বোরোর উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসবে। ফলে জমির বর্গা, সার, কীটনাশক ও অন্যান্য কৃষি খরচ উঠে আসবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।

গত শুক্রবার আজমিরীগঞ্জের বদলপুর, আদমপুর ও জলসুখা হাওর এবং বানিয়াচং উপজেলার বড়কান্দি, মন্দরী, মক্রমপুরসহ কয়েকটি হাওর ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা বোরো ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত। তবে চাষিদের মুখে হাসি নেই। চেহারায় যেন হতাশার চাপ। কারণ একটাই, স্থানীয় চাষিরা অতি ফলনের আশায় উচ্চফলনশীল জাতের ধান ব্রি-২৮ ও ২৯ জাত আবাদ করে বিপাকে পড়েছেন। বৈশাখী এ বোরো ধান কাটতে গিয়ে দেখতে পান জমির প্রায় ৪০ শতাংশ ধান শিষের ভেতরে চাল নেই। এ পরিস্থিতিতে এবারের বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চাষিরা।

বানিয়াচংয়ের বড়কান্দি হাওরের কৃষক জয়তুন মিয়া বলেন, স্থানীয় কৃষকদের মতে, প্রায় ৪০ শতাংশ ধানের ভেতরেই চাল নেই।

একই হাওরের কৃষক রমজান আলী বলেন, তিনি এ বছর ২০ বিঘা জমিতে উচ্চফলনের আশায় ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের ধান রোপণ করেছিলেন। প্রথম দিকে ভালো ফলন দেখতে পান। কিন্তু কাটতে গিয়ে দেখেন, অধিকাংশ ধানেই শিষ নেই। তিনি গত বছর একই পরিমাণ জমি থেকে ৪০০ মণের বেশি ধান উৎপাদন হলেও এবার তা অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে করছেন।

আজমিরীগঞ্জের হিলালপুর, গুচ্ছগ্রাম, পিরিজপুর, সোনাকান্দি হাওরে আরও কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তাঁরাও একই সমস্যার কথা জানান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ব্রি ২৮ ও ২৯ জাতের ধানের বদলে অন্যান্য জাতের উচ্চফলনশীল ধানের প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয় কৃষকদের। তারপরও কেন চাষিরা এ বীজ ফলন করে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন, তা বোধগম্য নয়।