• জুন ২৪, ২০২৩
  • আন্তর্জাতিক
  • 117
মস্কো ছেড়েছেন পুতিন?

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনারের সৈন্যরা যখন রাজধানী মস্কোর দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোথায় অবস্থান করছেন তা নিয়ে জল্পনা চলছে। শনিবার এই জল্পনার ব্যাপারে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট মস্কোতে আছেন, ‘ক্রেমলিনে’ কাজ করছেন।

এদিকে, রাশিয়ার এই প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে বিশেষ বিমানে করে মস্কো ত্যাগ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।

ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার টোয়েন্টিফোরের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ব্যবহারকারী পুতিনের বিশেষ বিমান আইআই-৯৬-৩০০পিইউ রাশিয়ার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১৬ মিনিটে মস্কো ছেড়েছে বলে দাবি করেছেন।

তারা বলেছেন, পুতিনকে বহনকারী বিমান মস্কোর উত্তর-পশ্চিমের দিকে চলে গেছে। বিমানটি মস্কোর উত্তর-পশ্চিমের তেভার শহরে পৌঁছানোর পর রাডার থেকে উধাও হয়ে গেছে।

তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ওই বিমানে পুতিন ছিলেন কি না তা জানার কোনো উপায় নেই। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন মস্কোর উত্তর-পশ্চিমে লেক ভালদাইতে অবস্থিত বিশাল বাসভবনে প্রায়ই সময় কাটান এবং রাজধানীতে স্থায়ীভাবে থাকেন না তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ভাইসগ্রাড টোয়েন্টিফোর নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ফ্লাইটরাডারে পুতিনের বিশেষ বিমানের মস্কো ত্যাগের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সেন্ট পিটার্সবার্গের উদ্দেশে মস্কো ত্যাগ করেছে পুতিনের বিমান। ওয়াগনার গ্রুপের সামরিক বহর এগিয়ে আসায় তিনি পালিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।

যদিও শনিবার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ওয়াগনারের বিদ্রোহকে ‘পেছন থেকে ছুরিকাঘাতের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে যারা দেশের অভ্যন্তরে ‘বিদেশি শত্রুদের’ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে— রাশিয়ার স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার পিএমসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোজিন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দিয়ে মস্কোর নেতৃত্বকে উচ্ছেদ করতে ওয়াগনার গ্রুপের ২৫ হাজার যোদ্ধা নিয়ে ইউক্রেন থেকে মস্কো অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন। এই ঘোষণার পর শনিবার জাতির উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন ভ্লাদিমির পুতিন।

তবে পুরো ভাষণে একবারও পিএমসি ওয়াগনার এবং এই কোম্পানির শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নাম উচ্চারণ করেননি তিনি।

শনিবারের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাশিয়ার নাগরিক, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, আইনপ্রয়োগকারী বাহিনীর সদস্য, সৈনিক ও কমান্ডার— যারা এখন যুদ্ধক্ষেত্রে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে যুদ্ধ করছেন, প্রতিপক্ষের হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছেন— আমি জানি, তারা বীরত্বের সঙ্গে তাদের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি তাদের সবার কাছে আজ আবেদন জানাচ্ছি।’

‘আমি সেই সব সেনা সদস্যের প্রতিও আবেদন জানাচ্ছি, যাদের সশস্ত্র বিদ্রোহের মতো গুরুতর অপরাধে সংশ্লিষ্ট হতে বাধ্য করা বা উসকানি দেওয়া হচ্ছে। আজ আমি রাশিয়ার সব অঞ্চলের কমান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’

‘আপনারা সবাই জানেন, এমন একটি যুদ্ধে আমরা জড়িয়ে পড়েছি— যার ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে রাশিয়ার জনগণের ভাগ্য। তাই এ যুদ্ধে রাশিয়ার সব বাহিনী ও শক্তির মধ্যে ঐক্য, সংহতি এবং দায়িত্ববান থাকা খুবই জরুরি। যখন সবকিছু আমাদের বিরুদ্ধে— সেসময় নিজেদের মধ্যকার যে কোনো কলহ-বিবাদের সুযোগ শত্রুরা নিতে পারে এবং আমাদেরকে কোনঠাসা করতে তা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।’