• নভেম্বর ৩, ২০২০
  • রাজনীতি
  • 406
গণতন্ত্র মুক্ত করার জন্য খোকাকে প্রয়োজন ছিল: ফখরুল

নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যখন আমরা একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে বাস করছি, যখন এই সরকার একটা দানবের মতো আমাদের সমস্ত মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম তাকে ধবংস করে দিচ্ছে। তখন তাকে (সাদেক হোসেন খোকা) আমাদের প্রয়োজন ছিলো দেশনেত্রীকে মুক্ত করবার জন্য, দেশকে মুক্ত করবার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার জন্য।

মঙ্গলবার (০৩ নভেম্বর) রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার স্মরণে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

খোকার বর্ণাঢ্য জীবনকর্ম তু্লে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তিনি আজীবন এক সংগ্রামী মানুষ। তার এই হঠাৎ করে চলে যাওয়া আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে অনেকখানি ব্যাহত করবে। তার সাহস, তার দেশপ্রেম আমাদের প্রয়োজন ছিলো আজকে। আসুন আমরা সবাই আজ শুধু তাকে স্মরণ নয়, তার যে কাজ, তার যে পথ চলা, তার যে সংগ্রাম তাকে সামনে নিয়ে আমরা তার মতো সাহসিকতার সঙ্গে এই গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার চেষ্টা করি, দেশনেত্রীকে মুক্ত করবার চেষ্টা করি, সত্যিকার অর্থে দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সুস্থ থাকুন- একথা বার বার করে এজন্য বলছি যে, আমাদের অনেক নেতা, অনেক কর্মী কিন্তু এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে শুরু করে জেলা নেতারা পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। সেজন্য সবাই পারতপক্ষে সুস্থ থাকার চেষ্টা করবেন, নিরাপদ থাকবেন- এই দোয়া চাই আল্লাহর কা্ছে, সবাইকে আল্লাহ সুস্থ রাখুক, নিরাপদে রাখুক।

স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সাদেক হোসেন খোকা সবসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আমাদের অত্যন্ত কষ্ট লাগে যে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আজকে যারা মুক্তিযুদ্ধের ফেরিওয়ালা বলে দাবি করে, আজকে সরকারের সব জায়গায় যারা রয়েছে সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বার বার হত্যা করছেন।

জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা খোকার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, আজকে অনেকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধ করেনও নাই, দেখেনও নাই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ না হলে কনভেনশন ওয়ারে পাশের দেশের সীমানার মধ্য থেকে যুদ্ধ করলেও বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। দিস ইজ রিয়েলিটি। আমি-খোকা আমরা একসঙ্গে মাঠে-ময়দানে গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করি। আমি সেই খোকাকে সালাম করি। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে জীবনকে বাজি রেখে দেশমাতৃকার জন্য যে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। দুর্ভাগ্য, তার মতো একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে দেশ স্বাধীন করার জন্য জীবন দিতে গেলেও সেই মুক্তিযোদ্ধা তার নিজের মাটিতে এসে তার প্রাণ ত্যাগ করার সুযোগটা হলো না এই সরকারের কারণে।

একাত্তরের বীর গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মন্ত্রী ও অবিভক্ত ঢাকার নির্বাচিত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সাদেক হোসেন খোকা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা হয়।
২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাদেক হোসেন খোকা। পরে তার মরদেহ দেশে এনে জুরাইনের কবর স্থানে দাফন করা হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য রাখেন।