• ডিসেম্বর ২৬, ২০২০
  • মৌলভীবাজার
  • 385
কুলাউড়ায় জঙ্গলের গাছে প্রেমিকের ফাঁস, পাহারায় প্রেমিকা!

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ ছেলের নাম শিপন মালাকার (১৭)। ধর্মে হিন্দু। আর মেয়েটির বয়স ১৩। ধর্মে মুসলমান। দুজন যদিও দুই ধর্মের তবু তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যা মেনে নেয়নি তাদের পরিবার।

শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঘর ছেড়ে পাহাড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কিন্ত তাদের সেই প্রেমের স্বপ্ন গভীর রাতে জঙ্গলেই ভেঙে যায়।

রাতে সীমান্তবর্তী পাহাড় থেকে পা ছিটকে পড়ে যায় কিশোরী। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে খোঁজে পায়নি শিপন। পরে নো ম্যান্সল্যান্ডে পরনের গেঞ্জি দিয়ে গাছের ডালে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে শিপন।

এমন ঘটনাটি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী এওলাছড়া পানপুঞ্জির গহীন জঙ্গলে।

শনিবার দুপুরে শিপন মালাকার (১৭) নামের এই তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শিপন স্থানীয় পৃথিমপাশা ইউনিয়নের গণকিয়া গ্রামের সিন্ধু মালাকারের ছেলে। বিষয়টি নিয়ে কুলাউড়া চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সিন্দু মালাকারের ছেলে সিএনজি চালক শিপন মালাকার। আর তার প্রেমিকা একই ইউনিয়নের একটি স্কুলেোর অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।

জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে শিপন প্রেমিকাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সন্ধ্যার দিকে তারা দুজনে ভারতে পালানোর উদ্দেশ্যে সীমান্তবর্তী এওলাছড়া পুঞ্জির গহীনে চলে যায়। সেখানে তারা অনেক সময় অবস্থান করে।

ওই কিশোরী জানায়, শুক্রবার বিকেলে শিপন আমাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর রাতে এওলাছড়া পানপুঞ্জির গহীন জঙ্গলে অবস্থান করি। একপর্যায়ে রাত প্রায় ২টায় শিপনের কাছ থেকে পাহাড়ের নিচে আমি ছিটকে পড়ে যাই। তখন থেকে প্রায় তিন ঘন্টা আমি অজ্ঞান ছিলাম। ভোরে শিপনকে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। সকালে তার পরনের গেঞ্জি দিয়ে গাছের ডালে ফাঁস লাগিয়ে অবস্থায় দেখতে পাই। এসময় ঘটনাস্থলে নিজে লাশ পাহারা দেই। আমাদের প্রেমের সম্পর্ক দুই বছরের।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান পৃথিমপাশা ইউপি চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান, কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এমএ রহমান আতিক, স্থানীয় ইউপি সদস্য সিলভেস্টার পাঠান, হাজী মাকসুদ আলী, আব্দুল মনাফ প্রমুখ।

কুলাউড়া থানার এসআই মহসীন তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করার সময় লাশের পাশে পাহারারত অবস্থায় এনি আক্তার নামের এক কিশোরীকে পাওয়া যায়।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় বলেন, সুরতহালে ওই কিশোরের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। কিশোরী এনিকে তার মা বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।