• মে ৩১, ২০২১
  • শীর্ষ খবর
  • 418
নবীগঞ্জে ‘মারধরের প্রতিশোধ’ নিতে পুরো গ্রাম লণ্ডভণ্ড

 

নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউন্দা ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে গজনাইপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। এসময় লুট করে নেওয়া হয়েছে নোয়াগাঁও গ্রামের গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ধান।

রবিবার (৩০ মে) দুপুরে এমন নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়। ঘটনাস্থলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েও হামলাকারীদের ঠেকাতে পারেনি।

গজানাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামের এক দম্পত্তিকে মারধরের প্রতিশোধ নিতে পুরো গ্রামবাসীর উপর এমন হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় পানিউন্দা ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, সম্প্রতি সাতাইহাল গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর উদ্দিন বীর প্রতীকের মালিকানাধীন মৎস্য খামারের পাহারাদার ও তার স্ত্রীকে মারধর করে নোয়াগাঁও গ্রামের কয়েকজন লোক। মারধরে আহত দম্পতি বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা করেন নূর উদ্দিন।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গজনাইপুর ইউনিয়নের সাতাইহাল গ্রামসহ ৬ মৌজার লোকজন মাইকিং করে ৩ কিলোমিটার দূরের আরেকটি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে গিয়ে হামলা চালায়। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে লণ্ডভণ্ড করে দেয় পুরো গ্রাম।

এদিকে হামলার প্রস্তুতির খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহি উদ্দিন ও নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমদসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তারা উভয় পক্ষের লোকজনদের নিয়ে বৈঠক করেন। তবে বৈঠক চলাকালেই নোয়াগাঁও গ্রামে ঢুকে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়।

একপর্যায়ে হামলাকারীরা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে, ১৫/১৬টি গরু, ১০/১৫টি ছাগল, বেশকয়েকটি হাঁস ও মোরগ এবং বিভিন্ন বাড়ি থেকে কমপক্ষে ৩ হাজার মণ ধান লুট করে নিয়ে যায়।

অগ্নিসংযোগের ফলে ১৩টি পাকা-আধা পাকা, টিনসেটের বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে ধান-চালসহ ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এতে ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় ৬০/৭০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে পানিউন্দা ইউপি চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান বলেন, সাতাইহাল ৬ মৌজার মানুষ এত দুর থেকে এসে নোয়াগাঁও গ্রামে ঢুকে যে তাণ্ডব করেছে তা দুঃখজনক। তারা ধান, গরু, ছাগল, হাঁস মোরগ এমনকি মোরগের ডিম পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে যায়। ১৩টি ঘর সম্পুর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ডালিম আহমদ বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তদন্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি৷

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মহি উদ্দীন আহমেদ বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। সকাল থেকেই ঘটনার খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে ছিল। কিন্তু হামলাকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধোঁকা দিয়ে হামলা চালিয়েছে৷

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং সরকারিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

ইউএনও বলেন, একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠি সাধারণ মানুষকে উসকানি দিয়ে এমন হামলা চালিয়েছে।