• মার্চ ২৫, ২০২২
  • মৌলভীবাজার
  • 247
কমলগঞ্জে ১৬০ ফুট গভীর নলকূপেও পানি উঠে না

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে গ্রামগঞ্জেও। প্রচণ্ড খরার কারণে গত ২০ দিন যাবত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের চার গ্রামে প্রায় চারশ অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না।

ফলে বিশুদ্ধ পানি সংকটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অর্ধসহস্রাধিক পরিবারের সদস্যরা। আরও বিভিন্ন স্থান থেকেও অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না বলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে প্রচণ্ড খরার কারণে পুকুর, খাল-বিল, নদী-নালায় পানি শুকিয়ে গেছে। সম্প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অগভীর নলকূপসমূহেও পানি উঠছে না। ইতোপূর্বে কমলগঞ্জের অগভীর নলকুপসমূহে কখনো পানি না উঠার সংবাদ পাওয়া যায়নি। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন স্থানে গভীর নলকূপ স্থাপন করায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে এমন পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।

গত ২০ দিন যাবত উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিউয়নের রামপুর, নারায়ণক্ষেত্র, রায়নগর, রামচন্দ্রপুরসহ আশপাশের আরও কিছু এলাকার অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। ১৬০ ফুট পরিমাণ গভীর নলকূপেও পানি উঠছে না। বর্তমানে নানা স্থানে গভীর নলকূপ যেখানে ৫শ’ থেকে ৬শ’ ফুট পরিমাণ গভীর নলকূপ রয়েছে সেসব নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে। গভীর নলকূপের কারণেই অগভীর নলকূপসমূহে পানি উঠছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছেন।

তাছাড়া পুকুর, খালবিলেও পানি শুকিয়ে গেছে। বিশুদ্ধ পানি না পাওয়ার কারণে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। দূর-দূরান্তের বাড়িঘর থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করলেও গোসল, বাথরুমের পানি পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

নারায়ণক্ষেত্র গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহান মিয়া, আইয়ুব আলী, আজিজুর রহমান, আব্দুল বাছিত খান, রামপুর গ্রামের শামীম মিয়া, রামচন্দ্রপুর গ্রামের রুশন মিয়া, বিনয় চক্রবর্তী বলেন, গত ১৫/২০ দিন যাবত আমাদের গ্রামের অধিকাংশ অগভীর নলকূপসমূহে পানি উঠছে না। অনেক চাপাচাপি করেও পানি তোলা যাচ্ছে না। এতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। তাছাড়া গোসল ও বাথরুমের পানিরও তীব্র সমস্যা।

তারা আরও বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে খাবারের জন্য নলকূপের বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করে আনতে হচ্ছে। তবে পুকুর, খাল-বিলে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পরিবার সদস্যদের জন্য গোসল ও বাথরুমের পানির সংকটে ভুগতে হচ্ছে।

মুন্সীবাজার ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য সুনীল মালাকার বলেন, ইউনিয়নের রামপুর, নারায়ণক্ষেত্র, রায়নগর ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। আমার বাড়ির নলকূপেও পানি না উঠার কারণে দু’একদিন পরে গোসল করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এসব গ্রামের প্রায় চারশ’ নলকূপে পানি উঠছে না এবং হাজারো পরিবারের সদস্যরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সুজন সরকার বলেন, আসলে এখন খরার সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে অথবা ভূমিকম্পের কারণেও কিছু কিছু স্থানে স্যালো হাতচাপা নলকূপ-৬ নম্বরে পানি উঠে না। হয়তো পানির লেভেল নিচে নেমে গেছে।

এ রকম অভিযোগ উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে শোনা গেছে বলেও তিনি জানান।