• ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
  • লিড নিউস
  • 245
শাবিতে মুজতবা আলী হলে সে রাতে র‌্যাগিংয়ে যা ঘটেছিল

নিউজ ডেস্কঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজতবা আলী হলে এক শিক্ষার্থীকে র‍্যাগ দেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ওই হলে সে দিন কী ঘটেছিল, সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো অনেকটা গোপন রেখেছে।

তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন (বিবিএ) বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে র‍্যাগ দিয়েছিলেন একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। তবে শুধু এক শিক্ষার্থী নয়, নবীন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সে দিন র‍্যাগ দেওয়া হয়েছিল। র‍্যাগের শিকার নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক শিক্ষার্থী ভয়ে বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। পরে বাড়ি থেকে বিষয়টি মুঠোফোনের খুদে বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধানকে অবহিত করেন। ওই শিক্ষার্থী ওই রাতের ঘটনাকে তাঁর ‘জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

ওই শিক্ষার্থী খুদে বার্তায় লিখেছেন, তিনি ১৯ ফ্রেব্রুয়ারি মুজতবা আলী হলে ওঠেন। ২০ ফ্রেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিভাগের ইমিডিয়েট সিনিয়র (দ্বিতীয় বর্ষের শির্ক্ষার্থীরা) নবীন শিক্ষার্থীদের হলের ১১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে যান। প্রথমে তিনি ওই কক্ষে না গেলে পরে তাঁর বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান। ওই কক্ষে বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী আসিকসহ ১০ থেকে ১৫ জন ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন। ওই কক্ষে নিয়ে যাওয়ার পর জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে আপত্তিকর দৃশ্যে অভিনয় করতে বাধ্য করেন। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতনেরও হুমকি দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, তাঁকে আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে যেতে বলেছেন। এ জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে তিনি তখন কোথায় অবস্থান করছিলেন, সেটা জানাতে চাননি। ওই রাতের ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি পরে বলবেন বলে জানান।

এর আগে র‍্যাগের ঘটনা তদন্তে গতকাল বুধবার বিকেলে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. খায়রুল ইসলামকে প্রধান করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মাজহারুল হাসান মজুমদার, সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট আবু সায়েদ আরফিন খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট মনিরুজ্জামান খান ও সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান।

কমিটি ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করলেও বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্য ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মাজহারুল হাসান মজুমদার।

তিনি বলেন, ‘তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। আমরা সময়মতো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’ এদিকে বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীদের বিস্তারিত পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ দুপুরে এসব বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে কথা বলা হবে।