• আগস্ট ১৬, ২০২০
  • জাতীয়
  • 366
আরও ১৩ জোড়া ট্রেন চালু

নিউজ ডেস্কঃ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আজ থেকে নতুন করে ১২ জোড়া আন্তনগর এবং এক জোড়া কমিউটার ট্রেন চালু হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন ৩০ জোড়া যাত্রীবাহী (যাওয়া–আসা মিলে দিনে ৬০টি) ট্রেন চালু হলো।

রোববার (১৬ আগষ্ট)সকালে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন কমলাপুর স্টেশনে নতুন চালু হওয়া ট্রেন পরিদর্শনে যান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চলাচল করবে।

রেলে সব মিলিয়ে ৩৫৫টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আন্তনগর ট্রেন ৫০ জোড়া বা ১০০টি। করোনা পরিস্থিতিতে মার্চের শেষ সপ্তাহে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর নামমাত্র মালবাহী ট্রেন চলাচল করেছে। ৩১ মে থেকে আট জোড়া আন্তনগর যাত্রীবাহী ট্রেন দিয়ে পুনরায় সেবা চালু হয়। জুনে আরও ১১ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চালু করা হয়। তবে যাত্রীর অভাবে দুই জোড়া ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়।

রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীবাহী ১৭ জোড়া ট্রেন পরিচালনা করছিলাম। যেহেতু সরকার আস্তে আস্তে দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে, সেই নির্দেশনায় আজ থেকে আরও ১৩ জোড়া ট্রেন যুক্ত করেছি।’

কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করা হবে কি না, জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কালোবাজারি বন্ধে এ কাজ করছি । অনলাইন টিকিট কাটায় ট্রেন খালি যাচ্ছে না। আস্তে আস্তে করে স্বাভাবিক করছি।’ তিনি আরও বলেন, খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া রেলভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো খোলেনি। এ জন্য ট্রেনের অর্ধেক টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। দূর থেকে এসে যদি দেখে কাউন্টারে টিকিট নেই, তাহলে ঝুঁকি বাড়ে। আস্তে আস্তে সবাই অভ্যস্ত হয়ে যাবে। যাত্রীদের সুবিধার্থে সবকিছু করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চালাতে গিয়ে অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হচ্ছে। টিকিট পাওয়া যাচ্ছে শুধু অনলাইনে। কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। এ জন্য অর্ধেক আসনেরও প্রায় অর্ধেক টিকিট অবিক্রীত থাকছে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ ছাড়া একজনের নামে কাটা টিকিটে অন্য কারও ভ্রমণ বন্ধে ট্রেনের ভেতর অভিযান শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এসব কারণে, যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। টিকিট বিক্রিও কিছুটা কম বলে জানা গেছে।

যাত্রীদের চাপ এড়াতে রাজধানীর বিমানবন্দর, গাজীপুরের জয়দেবপুর ও টঙ্গী, নরসিংদী স্টেশনে ট্রেন থামছে না। কিশোরগঞ্জের ভৈরববাজারেও ট্রেনের যাত্রাবিরতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই স্টেশনগুলোতে যাত্রীর বাইরে অযাচিত মানুষের গমনাগমন ঠেকাতে বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। এই স্টেশনগুলো চালু না হলে যাত্রী বাড়বে না বলে মনে করছেন রেলের পরিচালনা (অপারেশন) বিভাগের কর্মকর্তারা।

রেলের প্রকৌশল বিভাগের সূত্র বলছে, ৩০ আগস্টের মধ্যে স্টেশনগুলোর কাজ শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। তবে এর মধ্যে কাজ শেষ হবে না। কারণ, বিমানবন্দর স্টেশনে মোজাইক করাসহ আরও কিছু কাজ বেড়েছে। ফলে ১৫ সেপ্টেম্বর আগে পুরোদমে চালু করা যাবে না।

রেলওয়ে মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রেলে প্রায় দুই শতাধিক মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথেই ৩৪টি ট্রেন চলাচল করে। লোকাল ও কমিউটার ট্রেনগুলোতেই সবচেয়ে বেশি যাত্রী যাতায়াত করে। এর মধ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা-গাজীপুর, ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-জামালপুর পথে বিপুল যাত্রী হয়। এসব পথে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় অনেক ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা-জামালপুর পথের বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চলা একটি কমিউটার ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। ৩০ আগস্টের মূল্যায়ন করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

রেলের পরিচালন বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঝুলে ঝুলে যাত্রী যাচ্ছে, এমন ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ হোক—এমনটা চাইছে না রেল কর্তৃপক্ষ। রেল কর্তৃপক্ষ নিজেই চাইছে যাত্রী কম হোক। এ জন্যই স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি অব্যাহত রাখা হয়েছে। অধিক যাত্রী হয়, এমন পথে লোকাল বা কমিউটার ট্রেন চালু করা হয়নি। এ ছাড়া শুধু অনলাইনে টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত এবং একজনের নামে কাটা টিকিট দিয়ে অন্যের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার কারণে যাত্রীরা কিছুটা হয়রানির শিকার হচ্ছে। যাত্রীও কম হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলছেন, ১৫ সেপ্টেম্বরের পর সবকিছু স্বাভাবিক হতে পারে।