• নভেম্বর ৫, ২০২১
  • জাতীয়
  • 292
জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার করল কী, বিস্ময় ফখরুলের

নিউজ ডেস্কঃ ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পেছনে সরকারের যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, এই দাম বাড়ার যুক্তিটা কী?

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম এ প্রশ্ন তোলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যুক্তিটা কী দিয়েছে? আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমে গিয়েছিল, তখন তেলের দাম বেশি নেওয়া হয়েছে কেন? তখন তো কম নেওয়া হয়নি। তখন ওই টাকা চুরি করা হয়েছে। এখন আবার (সরকার) যেটা করছে, তাতে আমাদের (জনগণ) পকেট কেটে তাদের পকেট ভরা হচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজ দেখুন এমন একটা দুঃশাসনের কবলে পড়েছি আমরা। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক রাত্রে হঠাৎ করেই ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হলো। যেখানে ছিল ৬৫ টাকা, সেটা করা হলো ৮০ টাকা, এলপিজির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বিদ্যুতের দাম বছরে তিন-চারবার করে বাড়ানো হয়। বাজারে যাবেন কোনো কিছু কেনার জো নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে, বাংলাদেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে। এখন তারা মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে।

ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকার কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন হলে, কতটা জনবিচ্ছিন্ন হলে এ রকম অমানবিক একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একদিকে বাংলাদেশে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হলো। আর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাঁচ টাকা কমিয়ে দেওয়া হলো।

তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়ে দিয়ে কী করল…। আজ থেকে ধর্মঘট হচ্ছে। ট্রাক ও বাস বন্ধ। কাল থেকে দেখবেন ওই বাসমালিকেরা বলবে, ভাড়া বাড়াও, ভাড়া না বাড়ালে আমরা গাড়ি চালাতে পারব না। ট্রাকওয়ালারা বলবে, আমরা ট্রাক চালাতে পারব না। অর্থাৎ কাঁচাবাজার, চাল-ডাল-চিনি-তেল-লবণ সবকিছুর দাম বাড়তে থাকবে।’

ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে সহিংসতার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এই যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে তো বিরোধী দল মাঠে নেই। তারা তারাই। যেখানে নিজেদের মারামারিতে ৮৭ জন মৃত্যুবরণ করেছে। নির্বাচনব্যবস্থাকে তারা ধ্বংস করেছে।

প্রয়াত নেতা সাদেক হোসেন খোকাকে আপাদমস্তক একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ অভিহিত করে তাঁর মতো নেতা হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য তাঁর জীবন-দর্শন অনুসরণ করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী সাদেক হোসেন খোকা ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে তাঁর মরদেহ দেশে এনে জুরাইনে কবর দেওয়া হয়।

বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাস, ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ও খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুতফুর রহমান, সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।