• অক্টোবর ২, ২০২৩
  • রাজনীতি
  • 250
অক্টোবরেই সরকারকে চূড়ান্ত বার্তা দিতে চায় বিএনপি

নিউজ ডেস্কঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই একদফা দাবির বিষয়ে ফয়সালা করতে চায় বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। এজন্য তারা অক্টোবর মাসকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলনের ছক নির্ধারণ করছে। এই মাসেই তারা সরকারকে চূড়ান্ত বার্তা দিতে চায়। এজন্য চলতি কিংবা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপ শুরু করবে। এ সময়ে সমাবেশ, মহাসমাবেশ, রোডমার্চ, যুব ঐক্য এবং ছাত্র কনভেনশন করার চিন্তা করছে দলগুলো।
এরমধ্যে যদি দাবি না মেনে তফসিল ঘোষণা করা হয় তাহলে আন্দোলনের তৃতীয় ধাপ শুরু করবে সরকারবিরোধী দলগুলো। ২০শে অক্টোবর থেকে ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার ছুটি রয়েছে। তাই ২৫শে অক্টোবর থেকে তারা রাজপথে হার্ডলাইনের কর্মসূচি নিয়ে নামবে। এরমধ্যে অবরোধ, হরতাল এবং ঘেরাওসহ অবস্থানের মতো কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথাও ভাবছে দলগুলো।

দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি নির্ধারণে গত ২৯শে সেপ্টেম্বর থেকে সমমনা দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি’র লিয়াজোঁ কমিটি।

এদিন বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানে রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ, গণঅধিকার পরিষদ (নুর), এনডিএম প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়। এরআগে গত ২৪শে সেপ্টেম্বর ১২ দলীয় জোট ও সমমনা জাতীয়তাবাদী জোটের সঙ্গে বৈঠক হয় এবং গত শনিবার গণঅধিকার পরিষদ (ড. রেজা কিবরিয়া) সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ প্রসঙ্গে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বৈঠকে বলা হয়, সরকার দাবি না মেনে তফসিল ঘোষণা করলেই রাজপথে হার্ডলাইনের কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।

সূত্রে জানা গেছে, এসব বৈঠকে আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নেয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার আগেই আন্দোলনের ফয়সালা করতে চায় সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এতে তারা একমত হন যে, অক্টোবরেই আন্দোলনের একটা ফয়সালা করতে হবে। আর সরকার দাবি না মেনে তফসিল ঘোষণা করলেই রাজপথে হার্ডলাইনের কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা বলেছে দলগুলো। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও, সচিবালয় ঘেরাও, নির্বাচন কমিশন ঘেরাও, হরতাল ও অবস্থানের মতো কর্মসূচি দেয়ার পক্ষেও মত দেন তারা।

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান কে বলেন, সরকার পতনে একদফা দাবিতে কর্মসূচি চলছে। আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। এই কর্মসূচি শেষে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কর্মসূচি এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে অক্টোবর মাসে আন্দোলন জোরদার করা হবে। ছাত্র ও যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করা হবে। আর এই মাসেই সরকারকে চূড়ান্ত বার্তা দেয়া হবে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির পক্ষেই মত দিয়েছেন সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে দ্বিতীয় ধাপের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক থাকার বিষয়ে একমত হয়েছেন নেতারা। এরমধ্যে সমাবেশ, মহাসমাবেশ, রোডমার্চ, ছাত্র ও যুবকদের কনভেনশনের পক্ষে মত দেন নেতারা। এসব কর্মসূচি চলতি সপ্তাহে কিংবা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে কর্মসূচি এখনো নির্ধারিত হয়নি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি কে বলেন, সরকার পতনের আন্দোলন চলমান রয়েছে। জনগণকে সংগঠিত করে ব্যাপক গণজাগরণের প্রস্তুতির দিকে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। সুতরাং একতরফা নির্বাচনের ঘোষণা দিলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।
এদিকে আজ বিকাল ৩টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ ভুক্ত যুব সংগঠনের জোট ‘যুব গণতন্ত্র মঞ্চ’ এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই যুব সংগঠনগুলো হলো- জাতীয় যুব পরিষদ, নাগরিক যুব ঐক্য, বিপ্লবী যুব সংহতি, ভাসানী যুব পরিষদ, বাংলাদেশ যুব ফেডারেশন, রাষ্ট্র সংস্কার যুব আন্দোলন।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সরকারবিরোধী জোটগুলোর আন্দোলন চলমান রয়েছে। আর যুব ও ছাত্র কনভেনশন এবং মহাসমাবেশ করারও কথা রয়েছে।

গত ১৮ই সেপ্টেম্বর প্রথম ধাপে একদফা দাবিতে ৫টি রোডমার্চসহ টানা ১৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি। পরে ৫ই অক্টোবর পর্যন্ত কর্মসূচি বর্ধিত করা হয়। সেই সময় পৃথক পৃথকভাবে সমমনা দল এবং জোটগুলোও কর্মসূচি ঘোষণা করে। সূত্র: মানবজমিন